আদালতে স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন সাবেক সিইসি নূরুল হুদা

আদালত প্রতিবেদক
০১ জুলাই ২০২৫, ১৮:৩১
শেয়ার :
আদালতে স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন সাবেক সিইসি নূরুল হুদা

জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় আদালতে স্বীকারোকক্তিমূলক জবানবন্দী দিচ্ছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। দুই দফায় ৮ দিনের রিমান্ড শেষে আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করছেন বলে জানা গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান এ আসামিকে আদালতে হাজির করে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ড করার আবেদন করেন।

গত ২২ জুন নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এরপর গত শুক্রবার তাকে আবারও চারদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। গত ২৫ জুন মগবাজার এলাকা থেকে আরেক সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে রবিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২২ জুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান এ মামলার বাদী, যিনি একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর মামলায় দণ্ডবিধির ১২৪ (ক)/ ৪২০/৪০৬ ধারায় অভিযোগ সংযুক্ত করার আবেদন করা হয়।

মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ মামলার আসামি। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবি মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

এ ঘটনার সাক্ষী সব ভোটকেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিংশ অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরো অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে। এ ছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কি না, সে বিষয়ে উল্লেখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদ্‌ঘাটিত হবে।