ইন্দুরকানীর জোড়া খুনের প্রধান আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি প্রবাসী ইউনুস আলী শেখকে রাজধানী ঢাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। একই সঙ্গে তার বিদেশে পালানোর চেষ্টা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও উঠে এসেছে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ঢাকার দক্ষিণখান থানাধীন আজমপুর জয়নাল মার্কেট সংলগ্ন হাজী সবুর খান রোডের ২২ নম্বর বাড়ি থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২ এর সহায়তায় ইউনুস শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত একটি এয়ার টিকিট অনুযায়ী জানা গেছে, ইউনুস আলী শেখ ১৭ জুন জাজিরা এয়ারওয়েজে ফ্লাইট বুকিং করেন। ওই টিকিট অনুযায়ী আগামীকাল ২ জুলাই তার ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কুয়েত হয়ে সৌদি আরবের কাসিম যাওয়ার কথা ছিল। এতে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হত্যাকাণ্ডের পরপরই বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইউনুস শেখের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আটক ইউনুস শেখ ইন্দুরকানীর চন্ডিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চর বলেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা।
এদিকে র্যাব রাতে মোহাম্মদপুর থানায় ইউনুস আলীকে সোপর্দ করে। সেখান থেকে ইউনুসকে আজ মঙ্গলবার সকালে ইন্দুরকানীতে নিয়ে আসেন এস আই সাখাওয়াত, এএসআই আনোয়ার, সঙ্গীও ফোর্স মো. মামুন হোসেন ও মো. মশিউর রহমান।
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. মারুফ হোসেন জানান, জোরা খুনের মামলার প্রধান আসামি ইউনুস শেখকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ইন্দুরকানীতে আনা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড চাওয়া হবে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত মাসের ২৭ জুন রাত ১১টার দিকে বাড়ির সামনে পুকুরঘাটে চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম (৫০) ও তার ভাবী মুকুলী বেগমকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই হামলায় শহিদুলের স্ত্রী রেহেনা বেগম গুরুতর আহত হন। পরে শহিদুল ইসলামের বড় ভাই মর্তুজা হাওলাদার বাদী হয়ে ইন্দুরকানী থানায় ৬ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, নিহত শহিদুল পর পর ৩ বারের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক। এছাড়া তার ভাই মনিরুজ্জামান সেলিম ইন্দুরকানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিলুপ্ত জেলা পরিষদের সদস্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউনুস শেখ তার স্ত্রীর সঙ্গে শহিদুল ইসলামের পরকীয়ার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সন্দেহ করতেন। যার জেরেই এই হত্যা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।