পেতংতার্ন কি টিকতে পারবেন
ব্যাংককে বড় বিক্ষোভ
ব্যাংককে হাজারো মানুষ গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদত্যাগ দাবি করছে। সম্প্রতি এক ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। সেটি ঘিরেই এ বিক্ষোভের সূত্রপাত। এই বিক্ষোভের ধাক্কা সামলাতে আদৌ কি পারবেন পেতংতার্ন?
ফোনালাপে পেতংতার্ন সাবেক কম্বোডিয়ান নেতা হুন সেনকে ‘কাকা’ বলে সম্বোধন করেন। সেই ফোনে তিনি এক থাই সেনা কর্মকর্তাকে নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ওই সেনা শুধু ‘ভাব দেখাতে চেয়েছেন’, যা কোনো কাজে আসেনি।
এ মন্তব্যে মানুষ ক্ষুব্ধ। পেতংতার্ন পরে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেন, এটা ছিল ‘আলোচনার কৌশল’। তবু পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়নি। তার দলীয় জোটের এক গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল ইতোমধ্যে সরকার থেকে বেরিয়ে গেছে। শনিবার ব্যাংককে বিক্ষোভ শুরু হয়। ২০২৩ সালে ফিউ থাই দল ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বড়। বিক্ষোভকারীরা ভিক্টরি মনুমেন্টে জড়ো হয়। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে স্লোগান দেন। তারা হাতে প্ল্যাকার্ড ধরে রাখেন, তাতে লেখা ছিল ‘প্রধানমন্ত্রী জাতির শত্রু’। একজন বিক্ষোভকারী নেতা, পার্নথেপ পোর্পংপান বলেন, প্রধানমন্ত্রীই এখন সমস্যার উৎস। তাই তার সরে দাঁড়ানো উচিত।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
৭০ বছরের সেরি সাওয়াংমু ব্যাংককে আসেন বাসে চড়ে, দেশের উত্তরের দিক থেকে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তিনি এসেছেন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়। তার মতে, প্রধানমন্ত্রী এই দায়িত্বে অযোগ্য। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক রাজনৈতিক সংকট দেখেছি। জানি, এবার কী হতে যাচ্ছে।’
পেতংতার্ন ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ভবিষ্যতে হুন সেনের সঙ্গে আর কোনো ফোনালাপ করবেন না। তবে অনেকেই বলছেন, তিনি ও তার বাবা হুন সেনের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
পেতংতার্নের বয়স ৩৮ বছর। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে। থাকসিন ১৫ বছর নির্বাসনে থাকার পর ২০২৩ সালে দেশে ফেরেন। পেতংতার্ন মাত্র ১০ মাস আগে প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তারই ফুপু ইংলাক সিনাওয়াত্রা। এই বিক্ষোভের মূল দাবি সিনাওয়াত্রা পরিবারকে নেতৃত্ব থেকে সরানো। এই আন্দোলনের আয়োজন করেছে ‘ইউনাইটেড ফোর্স অব দ্য ল্যান্ড’ নামে একটি জাতীয়তাবাদী জোট। তারা গত ২০ বছর ধরেই সিনাওয়াত্রা পরিবারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, সরকার ও সংসদ এখন আর গণতন্ত্র বা সংবিধানকে সম্মান করছে না।
এখন সবাই তাকিয়ে আছে মঙ্গলবারের দিকে। সেদিন থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া পিটিশন গ্রহণ করা হবে কিনা। সিনেটররা পেতংতার্নের অপেশাদার আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস