দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর ব্যবসায়ী নজরুল হত্যার ২ আসামি গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর পান-সিগারেট ব্যবসায়ী নজরুল বেপারী (৪৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। জুয়ার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের হোসেন মন্ডল পাড়ার মো. সুলতানা মিয়ার ছেলে রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেন (২২) এবং একই গ্রামের মৃত আতর আলী মোল্লার ছেলে মো. ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ু (২০)।
গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের দুটি পৃথক অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর ও ঢাকার সাভারের রেডিও কলোনি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শরীফ আল রাজীব, পিপিএম-সেবা।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত ২ আসামির মধ্যে রনির গোয়ালন্দঘাট থানায় ডাকাতি, ছিনতাই, অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি প্রস্তুতি, নারী নির্যাতন, মারামারিসহ ১৪ টি মামলা এবং ঝড়ুর বিরুদ্ধে ২টি চুরি ও ডাকিাতি মামলা রয়েছে।’
জানা গেছে, নিহত নজরুল বেপারী গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং যৌনপল্লীতে পান ও সিগারেটের দোকান চালাতেন। গত ২৩ জুন রাত ১২টার দিকে দোকানের চাবি নিয়ে বের হন নজরুল। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন ভোরে উত্তর দৌলতদিয়া ইমান খার পাড়া এলাকায় রেলওয়ে সীমানার পাশে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন আসামিরা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত ১টি ধারাল দা, ১টি স্টিলের চাকু এবং ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে রেললাইনের পাশের ডোবার পানির নিচ থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব বলেন, ‘নজরুলের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা ও জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আসামি রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেন, মো. ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ুসহ আরও অজ্ঞাতনামা আসামিরা নজরুলকে হত্যা করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামি রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেনের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১টি ধারাল ছোল-দা উত্তর দৌলতদিয়া ইমান খার পাড়া রেল লাইনের পূর্ব পাশে রেলের ডোবার পানির ভিতর থেকে ও আসামি মো. ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ুর দেখানো মতে ১টি স্টিলের ধারালো চাকু উত্তর দৌলতদিয়া ইমান খার পাড়া রেল লাইনের পূর্ব পাশে রেলের ডোবার পানির ভিতর থেকে এবং ২ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, নিহত নজরুলের বিরুদ্ধেও জুয়াসহ দুটি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে। তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ তদন্ত ও অভিযান পরিচালনা করেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলামের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল, গোয়ালন্দঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক উত্তম কুমার ঘোষ, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মফিজ উদ্দিন।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কেউই ছাড় পাবে না। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।