কলকাতায় মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি পুনরুদ্ধারে চেষ্টা চলছে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার খিদিরপুরে ২০বি কার্ল মার্কস সরণির ভদ্রাসনে থাকা বাড়ি নিজের বন্ধু কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই হরিমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিক্রি করেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। সম্প্রতি এ তথ্য জানতে পেরেছে কলকাতা পৌরসভা। এখন বাড়িটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি উদ্ধারে নিজের অবস্থান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘মধুসূদন দত্তের বাড়ি হস্তান্তর হচ্ছিল। আমরা পৌরসভা থেকে আটকে দিয়েছি। প্রোমোটিং করতে দিচ্ছি না। শেষ পর্যন্ত একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ফান্ড জোগাড় করতে হবে। যাতে বাড়িটি পুনরুদ্ধার করা যায়।’
কলকাতা পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, কার্ল মার্কস সরণির ওই বাড়িতে আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনো প্ল্যান স্যাংশনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। হেরিটেজ কমিটির ‘গ্রেড ২এ’ তালিকাভুক্ত ইমারতটি রক্ষা করতে পৌরসভা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
অন্যদিকে, পুরসভার হেরিটেজ কমিটিও কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। কবি তার পৈতৃক ভিটা যে বিক্রি করে দিয়েছিলেন, সে সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে কমিটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্ট্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
হেরিটেজ কমিটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পৈতৃক বাড়ি বিক্রির নথি জোগাড় মানেই অর্ধেক যুদ্ধজয়। সেই নথিই বলে দেবে, ২০বি কার্ল মার্কস সরণির বাড়িটা আসলে মধুসূদন দত্তের।”
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এ ব্যাপারে সাহিত্য পরিষদ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করেছে কলকাতা পৌরসভা। তাতে মিলেছে উল্লেখযোগ্য তথ্য। পরিষদের পত্রিকার ২০০৬ সালের মার্চ সংখ্যায় লেখা হয়েছে, ‘২০ নং কার্ল মার্কস সরণি (পূবর্তন গার্ডেনরিচ রোড) খিদিরপুর-স্থিত বাড়িটি রামনারায়ণ বসু হস্তান্তরিত করেন রাজনারায়ণ দত্তকে। রাজনারায়ণ ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে তার পূত্র মধূসূদনকে নিয়ে আসেন ওই বাড়িতে। মধূসূদন ২০ নং সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের বাড়িতে বসবাস করেছেন বহুকাল।’
নিবন্ধে আরও জানানো হয়েছে, ‘ওইখান থেকে তিনি হিন্দু কলেজে যাতায়াত করতেন। পরে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে পিতৃগৃহ ত্যাগ।’ বিদেশ যাওয়ার সময় বাড়িটি তিনি বেচে দেন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
পাশাপাশি কলকাতা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। ২০বি কার্ল মার্কস সরণির বাড়ি ছাড়াও কবি বিভিন্ন সময়ে একাধিক বাড়িতে বসবাস করেছেন। মেয়রের বক্তব্যে ইঙ্গিত, সেই সব তথ্যও রাজ্য হেরিটেজ কমিশন জোগাড় করেছে। মেয়র বলেন, ‘মধুসূদন দত্ত কোন বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে থেকেছেন, তা চিহ্নিত করে দিতে হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছি।’