দেশে মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। একই সময়ে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুসারে নিট রিজার্ভের পরিমাণও ২৫ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম৬) অতিক্রম করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন।
বুধবার দিন শেষে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৭.৬৭ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২২.৬৫ বিলিয়ন ডলার।
মুখপাত্র বলেন, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, আইডিবি ও জাইকার ঋণের অর্থ নিশ্চিত হওয়ার পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন অতিক্রম করলো।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য একটি সূত্র জানায়, এ সময় ব্যবহার যোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯.৮০ বিলিয়ন ডলার।
গেল বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রবাসীরা বৈধ পথে টাকা পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই বাড়তি প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফেরায়। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপরও চাপ কমে যায়। বর্তমান অন্তবর্তী কালিন সরকারের ১০ মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে না। এর মধ্যে দেশের ব্যাংক ও রাজস্ব খাত সংস্কার, বাজেট সহায়তা ও ঋণ হিসেবে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ দেশে এসেছে। এর ফলে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
পেছনে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যকর পলিসি, পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার থেকে ঋণও বৈদেশিক মুদ্রার বড় উচ্চতায় পৌছতে ভূমিকা পালন করেছে। যা সরকারের স্বস্তি দিয়েছে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ দেশের রিজার্ভ উঠেছিল সর্বোচ্চ চার হাজার ৮শ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। করোনা পরবর্তী মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি ও করোনা মধ্যে আমদানি বন্ধ থাকা আমদানি শুরু হলে দ্রুত কমতে থাকে রিজার্ভ। এ সময় দেশ বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি পড়ে। ডলারের বিপরীতে টাকা দর অবনমন হতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে। সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে। ফলে আস্তে আস্তে তলানিতে নামে রিজার্ভ। ওই সময় রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা নিতে আইএমএফ এর কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়ে ২০২২ সালের জুলাইতে আবেদন করে বাংলাদেশ।
এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি এই ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। মোট ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ১৪০ কোটি ডলার অন্তর্ভুক্ত।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পায় বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার। চলতি সপ্তাহে ঋণের আরও দুই কিস্তির অর্থ পায়। এডিবি ও জায়কা ঋণের অর্থ যুক্ত হওয়ার ফলে রিজার্ভের এই নতুন মাইল ফলক তৈরি হলো।