কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দলকে আটকে জাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পরিদর্শনে আসা কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দল, ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীসহ সাংবাদিকদের ভবনে আটকে রেখে আন্দোলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। অটোরিকশা চালুর দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
এ সময় ভবনের ভেতর আটকা পড়েছেন স্নাতক ১ম বর্ষে ভর্তি হতে আসা শতাধিক শিক্ষার্থী, কমনওয়েলথ এশিয়া সুশাসন ও শান্তি বিষয়ক প্রধান মিশেল স্কোবির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল এবং কয়েকজন সাংবাদিক। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ কান্নাকাটি করেছেন বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম ভিতরে আটকে পড়াদের বের করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন।
এক পর্যায়ে কমনওয়েলথের অতিথি ও সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার দাবি জানালে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন এবং তেড়ে আসেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজির রহমান হিমেল। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংসদের জিএস একেএম রোকোনুজ্জামান রিমন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাইম আহমেদ সানিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এ আচরণ করেন। আন্দোলনকারী নন এমন শিক্ষার্থীরাও তাদেরকে প্রশাসনিক ভবনের ভিতরে যেতে দেওয়ার অনুরোধ করলে তাদের ওপরেও চড়াও হন বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন। তবে কিচুক্ষণ পরে তারা তালা খুলে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী আকিব সুলতান বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা ভবনের মধ্যে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের আটকে বিক্ষোভ চলমান রাখে। সাংবাদিকরা অন্তত তাদেরকে বের করে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তাদের কয়েকজন মব সৃষ্টি করেতে তেড়ে আসে। এটা ন্যাক্কারজনক।’
ভিতরে আটকে পড়া ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার বলেন, ‘আমি খুলনা থেকে এসেছি। আমাদের কি দোষ? ভর্তি শেষ না হতেই তারা আমাদের জিম্মি করে রেখেছে। তালা খুলতে বল্লেও কয়েকজন খারাপ ব্যবহার করেন।’
নীলফামারি জেলা থেকে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী নীরব রায় বলেন, ‘অনেক দূর থেকে এসে এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রথমদিনেই তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো। আজকে দুপুর সাড়ে ৩টার মধ্যে ভর্তি সময় বেধে দেওয়া আছে। জানিনা ভর্তি হতে পারব কিনা।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘তারা ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছিল। তাদেরকে বলা হয়েছে লিখিত আবেদন দিতে, সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে অংশীজনদের মতামত নিয়ে সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দুঃখজনকভাবে কিছু শিক্ষার্থী অতিউৎসাহী হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করেছে। সেগুলোর ফুটেজ সংগ্রহ করে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’