থানা তদন্ত কেন্দ্র চালু হয়নি, নিরাপত্তাহীনতায় ৪ ইউনিয়নের বাসিন্দারা

ফুলছড়ি প্রতিনিধি
২৫ জুন ২০২৫, ১০:২২
শেয়ার :
থানা তদন্ত কেন্দ্র চালু হয়নি, নিরাপত্তাহীনতায় ৪ ইউনিয়নের বাসিন্দারা

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের ৩ ইউনিয়ন—গজারিয়া, ফুলছড়ি ও ফজলুপুরের বাসিন্দারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। ফুলছড়ি থানা তদন্ত কেন্দ্রের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও দীর্ঘদিন ধরে এর কার্যক্রম চালু না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নদীভাঙন, দুর্গম চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানা সামাজিক সমস্যা এবং অপরাধ প্রবণতার কারণে এই চরাঞ্চল ইতোমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে পরিচিত। 

জানা গেছে, স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী পুলিশি উপস্থিতির জন্য তদন্ত কেন্দ্র চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন। যদিও ভবন ও অবকাঠামো প্রস্তুত, তবুও জনবল ও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অভাবে কেন্দ্রটি অনেক দিন হলো অকার্যকর।

স্থানীয় বাসিন্দা রজব উদ্দিন জানান, চরের এই এলাকায় গরু চুরি, জমি দখল, পারিবারিক বিরোধসহ নানা অপরাধ ঘটছে। এখানে সপ্তাহে দুদিন হাট হয়ে থাকে। পুলিশ না থাকায় হাটের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এই অঞ্চলের মানুষেরা। থানায় যেতে ২০-২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। তবে, থানা তদন্ত কেন্দ্র চালু হলে দ্রুত সহায়তা পাওয়া যেত বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

একই অভিযোগ করেন গজারিয়ার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম। তারা বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই এলাকা থেকে পুলিশ সরিয়ে নেওয়ার পর এখানকার মানুষ বিপাকে পড়েছে। তদন্ত কেন্দ্রের জন্য প্রশাসন সব প্রস্তুতি শেষ করলেও কোনো কারণে এখনো আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন দ্রæত এটি চালু হয়।’ 

মাজেদুর রহমান নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘থানার কার্যক্রম চালু না হওয়ায় এই বর্ষায় নদীর পানি বাড়লে চুরি-ডাকাতির ঘটনা আরও বেড়ে যাবে। এতে চরাঞ্চলসহ গজারিয়ার জনসাধারণের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার নিশাত এ্যঞ্জেলা বলেন, ‘তদন্ত কেন্দ্রটির কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন। আমাদের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি শেষ হলেও এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়নি। বিদ্যুৎ ছাড়া তো পুলিশের নিয়মিত কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। তবে আমি ইতোমধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, তারা অতি দ্রুত সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছেন। আশা করছি, জুলাই মাসের কোনো এক সময়ের মধ্যে আমরা তদন্ত কেন্দ্রটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করতে পারব।’

এদিকে স্থানীয়রা মনে করছেন, দ্রুত তদন্ত কেন্দ্র চালু হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অন্যথায় চরাঞ্চলের জনগণের নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।