ভোল পাল্টাচ্ছেন জ্যোতিকা জ্যোতি, চলছে সমালোচনা
শোবিজের পরিচিত মুখ জ্যোতিকা জ্যোতি। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ ও পরে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। দলটির হয়ে জাতীয় নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন ফরমও কিনেছিলেন এই অভিনেত্রী। এর আগে, ২০২৩ সালে রাজনীতির সুবাদে জ্যোতি বসেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালকের পদে।
আর গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনে বরাবরই চুপ ছিলেন জ্যোতিকা জ্যোতি। ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মৃত্যু-আহত হওয়ার ঘটনায়ও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ছিলেন বিগত সরকারের পক্ষে। ছাত্র-জনতার মৃত্যুর শোক উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস হওয়ার শোকে ছুটে গিয়েছিলেন বিটিভিতে।
এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের হাত ধরেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদল। টানা রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। গা ঢাকা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত অনেক শিল্পীরা। তবে জ্যোতিকা জ্যোতি তা করেননি। চেষ্টা করছেন সময়ের সঙ্গে নিজেকেও বদলানোর। যার প্রমাণ মেলে তার ফেসবুক পোস্টে।
চলতি বছর নারী দিবসে (৮ মার্চ) এই অভিনেত্রী ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘দুই নারীর হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ ছিল। আজ নারী দিবসে আমি তাদের মিস করি।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
এরপর ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের দিনই অভিনেত্রী ফেসবুকে লিখেন, ‘গত ৮/১০ মাসে যে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে দেশের মানুষ তাকিয়েছিল, আমার মতে তাদের মধ্যে সব থেকে পরিপক্ক এবং কল্যাণমূলক কথাবার্তা বলে আসছে তারেক জিয়া। আশা করি, এ মুহূর্তেও সে একটি ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত দেশকে উপহার দিবে।’
জ্যোতিকা জ্যোতির এমন পোস্ট ঘিরে নেটদুনিয়ার চলছে তুমুল সমালোচনা। অনেকের মতে, রঙ বদলাচ্ছেন জ্যোতি!
এদিকে, গতকাল সোমবার রাতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী। ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আওয়ামী সমর্থকেরা যারা আমাকে চিনতে পারছেন না এবং নানা রকম কুৎসা ছড়াচ্ছেন তাদের জন্য- আমাদের দেশের রাজনীতির চেহারা সাধারণত খুব নোংরা। বহুদিনের এই নোংরা প্র্যাকটিসের কারণে আমরা নির্দিষ্ট ছকের বাইরে কিছুই ভাবতে পারিনা। ফলে যারা একটু ভিন্নভাবে ভাবতে চায় তাদের পোহাতে হয় নানান অপবাদ আর যন্ত্রণা। আমি একজন শিল্পী, একদম শূন্য থেকে নিজের চেষ্টা আর যোগ্যতায় ততটুকুই হোক আমার অবস্থান তৈরি করেছি। কোনো ব্যক্তি বা দলের কোনো রকমের একবিন্দু সাহায্য ও সুবিধা আমি নেইনি।’
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যোগ্যতা আর চেষ্টায় কাজ করে যাওয়াই আমার নেশা। আমার আত্মসম্মানবোধ তীব্র থেকে তীব্রতর। আমার বিবেকবোধ আমাকে শিখিয়েছে ভিন্নমতকে সম্মান করা, মানুষের যোগ্যতাকে স্বীকার করা, নিজের এবং অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া, নিরপেক্ষতা, সহিষ্ণুতা। আমি দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসি। ভিন্ন দল, ভিন্ন মত, ভিন্ন ধর্ম হলেই যেকোন মানুষ আমার শত্রু না। কারন আমি কট্টরপন্থাকে সাপোর্ট করিনা। আমি আমার নীতিতে অনড়। সুযোগ বুঝে ভোল পাল্টাই না, রঙ বদলাই না। যে কোন বিষয় আমি গভীরভাবে দেখি, হালকা বাতাসে গা ভাসাই না।’
সবশেষে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকল, যাচাই-বাছাই না করে, কোনো বিষয় সম্পর্কে না বুঝে আপনাদের নিজের চিন্তার সাথে আমাকে জড়াবেন না। আপনাদের পড়াশোনার ঘাটতি, আপনাদের দলকানা মানসিকতা আর আপনাদের লোভ আমার ওপর চাপাবেন না প্লিজ।’
আরও পড়ুন:
‘এভাবে বিয়ে করা নাকি অর্থহীন’
জ্যোতিকা জ্যোতির এমন পোস্ট ভালোভাবে নেয়নি নেটিজনরা। তাদের কথায়- জয় বাংলা করতে করতে মুখের ফেনা বের করে নমিনেশন পেপার তুলছে, এখন ভোল পাল্টাচ্ছে। আর এই অভিনেত্রীর পোস্টে যেন হাসির রিয়েক্টের ছড়াছড়ি।