সাংবাদিককে ‘হাঁটু ভেঙে’ দেওয়ার হুমকিদাতা সেই অধ্যক্ষ বরখাস্ত
সংবাদ প্রকাশের জেরে ‘দৈনিক আমাদের সময়’-এর রংপুর প্রতিনিধি খন্দকার রাকিবুল ইসলামকে হাটু ভেঙে পঙ্গু করে দেওয়ার হুমকিদাতা অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোছা. খাদিজা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখের পর থেকে পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত হয়ে আসছে। এছাড়া ২৩ জুন ২০২৫ ইং তারিখের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। এর পরিবর্তে একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষক মো. রাজ্জাকুর রহমানকে দায়িত্ব প্রদান করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল ‘চুক্তিতে নকল সরবরাহের প্রতিযোগিতা এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে’ শিরোনামে ‘দৈনিক আমাদের সময়’ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে উল্লেখ করা হয়, মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে অধ্যক্ষ মো. মাহেদুল আলমের ছত্রছায়ায় আর্থিক চুক্তিতে নকল সরবরাহের প্রতিযোগিতা চলছে। এই সংবাদের পরেই ‘দৈনিক আমাদের সময়’-এর রংপুর প্রতিনিধি খন্দকার রাকিবুল ইসলামকে মুঠোফোনে হাটু ভেঙে পঙ্গু করে দেয়ার হুমকি দেন অধ্যক্ষ মো. মাহেদুল আলম।
হুমকির কলরেকর্ড বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে প্রায় অর্ধশত সাংবাদিক সংগঠন অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমের অপসারণের দাবি জানায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করে ও চুক্তিতে নকল সরবরাহের ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
এদিকে ভুয়া সনদে অধ্যক্ষ হয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে মাহেদুল আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরেই তদন্ত শুরু করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। তদন্ত শুরুর পরেই তার অপসারণের দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মমিন মন্ডল জানান, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় ও অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।