রাজস্ব ঘাটতি কমাতে প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের তাগিদ সিপিডির
বাজেটে এবারও রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে সরকারকে আবারও ব্যাংকিং খাতের দ্বারস্থ হতে হবে, যা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে চাপ সৃষ্টি করবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, রাজস্ব ঘাটতি কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার জরুরি।
গতকাল রবিবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, প্রতিবছরই এনবিআর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে, কারণ কাঠামো এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার হয়নি। এ অবস্থায় ঘাটতি মিটবে না। তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে এই বাজেট প্রণীত হয়েছে। গত তিন বছরে অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো নিম্নমুখী ছিল, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাজেটের অগ্রাধিকার ঠিক করাটাই বড় পরীক্ষা।
অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের প্রক্ষেপণও অনেকটা উচ্চাভিলাষী জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৬ সালে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হলেও ২০২৫-এর সংশোধিত বাজেটে ছিল ৫ শতাংশ এবং বিবিএসের পূর্বাভাস মাত্র ৪ শতাংশ। সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে ঘাটতি থাকলে উদ্দেশ্য পূরণ হয় না। একটি মধ্যবর্তী পর্যালোচনা করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা উচিত এবং স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এদিকে অনুষ্ঠানে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বিনিয়োগের স্থবিরতা কাটাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ই নয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। ‘গায়েবি মামলা’ সংস্কৃতি দেশের ব্যবসায় পরিম-লকে এক ধরনের গভীর অনিশ্চয়তায় ফেরেছে, যা অর্থনীতিকে আরও স্থবির করে তুলছে। এ পরিস্থিতি বদলাতে রাজনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারে অর্থনীতিবিদ থাকলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া বড় কোনো অর্থনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ, বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইনামুল হক খান, ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা এবং শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
উদ্বোধনী বক্তব্যে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক প্রয়োজনের তুলনায় বাজেট অপ্রতুল এবং এতে পরোক্ষ করের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের বাজেট করবৈষম্যকে বাড়িয়ে দেয় এবং দরিদ্রদের ওপর বোঝা চাপায়।