একজনের এনআইডি ব্যবহার করে পাসপোর্ট নিলো আরেকজন
একজনের এনআইডির (জাতীয় পরিচয়পত্র) ছবি ও ঠিকানা ব্যবহার করে অন্য আরেকজন পাসপোর্ট গ্রহণ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রাজধানীর বাসিন্দা নাঈম উদ্দিন ভূঁইয়া আমাদের সময়কে জানান, গত মার্চে আমার ব্যক্তিগত পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করি। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে হাজির হই মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। কিন্তু ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার সময় সিস্টেমে দেখা যায়, আমার এনআইডির ভিত্তিতে আগেই একটি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে, যার মালিক অন্য কেউ।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতারক চক্র নাঈমের এনআইডির ছবিসহ অন্যান্য তথ্য পরিবর্তন করে পাসপোর্ট গ্রহণ করে। এমনকি বদলে ফেলা হয়েছে স্থায়ী ঠিকানাও। অনুসন্ধান দলের সদস্যরা পাসপোর্টে দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে দেখতে পান, সেখানে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি কখনো বসবাস করেননি।
নাঈমের নামে থাকা আসল এনআইডি ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে নেওয়া পাসপোর্টের আবেদনপত্রও আমাদের সময়ের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর অফিসে পাসপোর্টের এনরোলমেন্ট সম্পন্ন হয়। পাসপোর্টটি ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ইস্যু করা হয় এবং সম্ভাব্য সংগ্রহের তারিখ ছিল ২ জানুয়ারি ২০২৫। এটি ১০ বছর মেয়াদি, ৪৮ পাতার সাধারণ পাসপোর্ট।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
পাসপোর্ট অফিসে এনআইডি, ছবি, ঠিকানা ও বায়োমেট্রিক তথ্য মিলিয়ে যাচাই করার নিয়ম থাকলেও এমন জালিয়াতি কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস দায় চাপায় পুলিশের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চের রিপোর্টের ওপর।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে সময় গণমাধ্যমে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পাসপোর্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে এসবি’র ভেরিফিকেশন রিপোর্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই ইস্যু করা হয়েছে পাসপোর্টটি।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এদিকে ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত তথ্য জানতে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চে লিখিত আবেদন করা হয় ২৮ এপ্রিল। ২৩ দিন পর তারা জানায়, এনআইডি জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যজনের পাসপোর্ট গ্রহণে পাসপোর্ট অফিস ও তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
তবে জালিয়াতি যিনি করেছেন, তার অবস্থান এখনো শনাক্ত করা যায়নি। আসলে তিনি দেশে আছেন নাকি দেশের বাইরে চলে গেছেন এ বিষয়েও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।