‘দ্য ব্যালট প্রজেক্ট’ /
ইউএনডিপি-অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চুক্তি করল ইসি
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘দ্য ব্যালট প্রজেক্ট’-এ আর্থিক সহায়তার চুক্তি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বুধবার রাজধানী আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ইসির গঠনের পর থেকেই ইউএনডিপির সহায়তা চেয়ে আসছি। তারা প্রথম থেকেই সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছে। ‘‘দ্যব্যালট প্রজেক্ট’-এ মোট ১৮ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে। অস্ট্রেলিয়া তাদের মুদ্রায় ২ মিলিয়ন ডলার সহায়তার কথা জানিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য ১৬টি কমপোন্টেট আছে। এই ১৬টির মধ্যে অর্থায়নের বিষয়ে ইউএনডিপির আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ২ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা আশা করি, এই প্রকল্পের ভবিষ্যত অর্থয়ানের জন্য দাতাদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। ‘
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
ইসি সচিব বলেন, ‘প্রকল্পটি ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এই প্রকল্পের আওতায় ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, অ্যাওয়ারনেন্স, ট্রেনিং, ইন্সটিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্ক- মোটাদাগে ১৬টি কম্পোনেন্টে এই প্রকল্প পরিচালিত হবে। আশা করি এটার বেস্ট ইউটিলাইজেশন হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভোটার রেজিস্ট্রেশন প্রসেসে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের ল্যাপটপ, স্ক্যানার, ক্যামেরা, অফিস মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্পের আজ এমওইউ হয়েছে।’
এ সময় অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা সংস্কার কমিশনের পাঁচজন কর্মকর্তাকে অস্ট্রেলিয়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, যাতে তারা ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যুর বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিতে এবং ধারণা পেতে পারেন। তবে আজ আমরা আনন্দিত যে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ‘‘দ্য ব্যালট প্রজেক্ট’’-এ সরাসরি সহায়তা হিসেবে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রদান করছি।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, গত বছর বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের কিছুদিন পরেই তারা জাতিসংঘের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়তা চায়। এরপর জাতিসংঘ একটি ‘নিড অ্যাসেসমেন্ট মিশন’ প্রেরণ করে, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করে এবং জাতিসংঘ কি ধরনের কারিগরি সহায়তা দিতে পারে, তার সীমারেখা নির্ধারণে কাজ করে।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক মাসে এই সুপারিশগুলো একটি প্রকল্পে রূপান্তরিত হয়েছে, যা ‘‘দ্য ব্যালট প্রজেক্ট’’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ সরকার এই প্রকল্পটি রেকর্ড সময়ে অনুমোদন করেছে। জাতিসংঘ, নির্বাচন কমিশন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এই প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করছে এবং আমরা গর্বিত যে আজ অস্ট্রেলিয়া এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রথম দাতা ও অংশীদার হিসেবে এগিয়ে এসেছে।’
স্টেফান লিলার বলেন, ‘এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো এবং ইউএন উইমেন। অস্ট্রেলিয়াই প্রথম দেশ, যারা এর পেছনে সরকারের ও করদাতাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমরা অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আশা করছি, অন্যরাও এগিয়ে আসবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে, যাতে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা নির্বাচন হয়ে ওঠে।’