বিএমইউতে এক বছরে ৩৩ হাজার ৫৯৩ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ
বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) গতকাল মঙ্গলবার বিশেষ স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, সেমিনার এবং রক্তদাতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের আয়োজনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়।
সেমিনারে জানানো হয়, ২০২৪ সালে বিএমইউ’র ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ ৩৩ হাজার ৫৯৩ ব্যাগ রক্ত নিরাপদ ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সংগ্রহ করেছে। স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা ছিল ৩৭৯ জন। বাকি রক্ত রোগীর আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়। সংগৃহীত রক্ত স্ক্রিনিং করে হেপাটাইটিস বি পাওয়া যায় ১১৬ জনের, হেপাটাইটিস সি ৭ জনের, এইচআইভি ৬ জনের এবং সিফিলিস ৪৩ জনের। এসব দূষিত রক্ত বাদ দিয়ে নিরাপদ রক্তই রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
একই বছরে ১৩ হাজার ৫৯৫ ব্যাগ রক্তকণিকা, ১২ হাজার ৭১০ ব্যাগ প্লাটিলেট এবং সমপরিমাণ প্ল্যাজমা প্রস্তুত করে রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া প্রায় ৫ হাজার রোগীর রক্তে অ্যান্টিবডি পরীক্ষাও করা হয়েছে। ডে-কেয়ার সেন্টারে দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার ৫০২ রোগীকে নিরাপদ রক্তের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। তিনি বলেন, ‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহ ও সেবার মান এখন অনেক উন্নত। এ ক্ষেত্রে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘রক্তের বিকল্প নেই। স্বেচ্ছায় রক্তদাতারাই অনেক জীবন রক্ষা করেন। তাদের সম্মান ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
বিএমইউর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাহরীন আখতার বলেন, ‘অনেক রোগীর অস্ত্রোপচারে একসঙ্গে ১০ ব্যাগ নিরাপদ রক্ত প্রয়োজন হয়। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রান্সফিউশন বিভাগের অবকাঠামো ও জনবল বাড়াতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আয়েশা খাতুন রক্তদানের সক্ষম ব্যক্তিদের প্রতি বছরে অন্তত একবার রক্তদানের আহ্বান জানান। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. সোনিয়া শরমিন মিয়া ও ডা. নাদিয়া শারমিন তৃষা। সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারাহ আনজুম সোনিয়া।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মো. মোছলেহ উদ্দিন, নিউরোসার্জন সহযোগী অধ্যাপক ডা. রুহুল কদ্দুস বিপ্লব, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ সাইফুল ইসলাম শাহিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. সুবর্ণা সাহাসহ বিভাগের চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, টেকনোলজিস্ট এবং স্বেচ্ছায় রক্তদাতারা।