‘লিচুরও বাগানে’র গীতিকার সত্তার পাগলার পরিবারের আকুতি
হাওর অঞ্চলের উপজেলা বারহাট্টার সিংধা ইউনিয়নের নুরুল্লারচর গ্রামের বাসিন্দা সত্তার পাগলা। হাওরে ঘাটুগান গেয়েই কেটেছে তার সময়। প্রায় সময় মোহনগঞ্জের লোকাল ট্রেনেও গাইতে দেখা গেছে এই গানপাগল মানুষটিকে। ৯৭ বছর বয়সে ২০১৪ সালের বৈশাখের ৪ তারিখ বিনা চিকিৎসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সত্তার পাগলা।
সম্প্রতি সত্তার পাগলার নামটি নতুন করে আলোচনায় এসেছে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ সিনেমার সুবাদে। এতে থাকা ‘লিচুর বাগানে’ গানটি ইতিমধ্যেই শ্রোতামহলে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। সঙ্গে উঠে এসেছে সত্তার পাগলার নামটিও। গীতিকার হিসেবে সত্তার পাগলার নামের পাশাপাশি আরও তিনজনের নাম যুক্ত করা হয়েছে গানটিতে। তারা হলেন- প্রীতম হাসান, মেহেদি আনসারি ও ইনামূল তাহসিন। এর কারণ তারা তিনজন গানটির কথায় কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন করেছেন। আবার গানটির বিবরণেও বলা হয়েছে- ‘লিচুর বাগানে’ (কে দিল পিড়িতের বেড়া) একটি প্রচলিত ঘাটুগান। এই লোকগানটির কথা সত্তার পাগলা কিছু অংশ যুক্ত করে গাইতেন। তার মাধ্যমেই এই গানটি বিখ্যাত হয়।
সেই সত্তার পাগলা মৃত্যুর সময় তিন কন্যা, দুই ছেলে ও স্ত্রী রব্বানুকে রেখে যান। বর্তমান ৭২ বছর বয়সী সত্তার পাগলার স্ত্রী স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র সম্বল ২২ শতাংশ বাড়ি এবং তিন কন্যা ও পুত্র নিয়ে বহু কষ্টে জীবনযাপন করছেন। থাকার একমাত্র ঘরটি ভেঙে পরলেও দেখার এবং সহযোগিতা করার কেউ নেই। টেনেটুনে চলছে তাদের সংসার জীবনের চাকা।
এদিকে, ‘তাণ্ডব’র নির্মাতা রায়হান রাফীর পক্ষ থেকে মাত্র ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয় সত্তার পাগলার পরিবারকে। ‘তাণ্ডব’ টিমের পক্ষ থেকে সত্তার পাগলার পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন নির্মাতা। সত্তার পাগলার পরিবারের দাবি- সেই আশ্বাস যেন আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ না থাকে।
মরহুম সত্তার পাগলার ছেলে মো. জয়নাল জানান, তারা দুই ভাই জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন। তাদের বৃদ্ধ মা’র থাকার ঘরটি যেন ঠিক করে দেওয়া হয়। ‘তাণ্ডব’র পরিচালক যেন তাদের জন্য এতটুকু করেন।
আরও পড়ুন:
স্ত্রীর কবরের পাশে পরীর নানা সমাহিত
সত্তার পাগলার স্ত্রী মোছা. রব্বানু বলেন, ‘আমার স্বামী বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। কেউ খোঁজ-খবর নেয়নি আমাদের। কেউ এগিয়ে আসেনি। উনার মৃত্যুর এত বছর পর উনি আলোচনায় এসেছেন “তাণ্ডব” সিনেমার জন্য। তবে আমাদের কোনো চাওয়া নেই। আমার স্বামীর কবরটা সংস্কার করে দেওয়া হোক। আর আমার স্বামীর ভিটাটা সংস্কার করে দেওয়া হোক। আর কোন দাবি নেই আমার।’