উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়িতে ১২শ বস্তা চাল পাওয়ার দাবি, যা জানা গেল

অনলাইন ডেস্ক
০৩ জুন ২০২৫, ১৪:৩৩
শেয়ার :
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়িতে ১২শ বস্তা চাল পাওয়ার দাবি, যা জানা গেল

অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেনের ঠিকাদারি ব্যবসায় নামার বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন আগে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। যার ফলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এক আদেশ জারির মাধ্যমে তার লাইসেন্স বাতিল করে। সম্প্রতি, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়িতে ১২শ বস্তা চাল পাওয়া গিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। পোস্টটিতে দাবি করা হচ্ছে, এসময় তার বাবাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি পুলিশদের ঘুষ দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করেন। 

প্রচারিত ভিডিওটিতে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি একজন দাঁড়িওয়ালা বয়স্ক ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যাকে তার বাড়িতে চালের বস্তা পাওয়া বিষয়ে একজন নারীকে বিভিন্ন কথা বলতেও শোনা যায়।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়িতে ১২শ বস্তা চাল পাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের ঘর থেকে চাল উদ্ধার করার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক ও এশিয়ান টিভি প্রতিনিধি মো. জামাল হোসেনের ফেসবুক আইডিতে গত ২ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও পোস্টটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি শাহরাস্তির সূচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের (কৃষ্ণপুর) ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যর বসতঘর থেকে দুঃস্থদের খাদ্য সহায়তার ১৬ বস্তা চাল উদ্ধারের ভিডিও। পাশপাশি জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিগার সুলতানার উপস্থিতিতে গভীর রাতে অভিজান চালিয়ে এসব মালামাল জব্দ ও ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদের প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়। এর অর্থ ভিডিওটি গুজব।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

তিনি লিখেছেন, ‘প্রথমে চাঁদপুরের একটি ঘটনাকে আমার বাড়ির ঘটনা বলে গুজব ছড়ানো হয় নিষিদ্ধ সংগঠনের বিভিন্ন সাইবার সেল থেকে। কোন প্রকার যাচাই ছাড়াই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নিষিদ্ধ সংগঠনের ছড়ানো গুজব সার্কুলেট করলেন। 

এর প্রেক্ষিতে নগর ভবন অবরোধ কারী জনৈক নেতার কর্মীরা আমার বাবাকে চালচোর, গমচোর বলে শ্লোগান দিচ্ছে। আমাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের বন্ধুরাও শুধুমাত্র প্রতিহিংসা বশত নিষিদ্ধ সংগঠনের ছড়ানো গুজব দিয়ে আমার এবং আমার পরিবারের মানহানি করছেন। অথচ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা গঠনমূলক রাজনীতি প্রত্যাশা করেছিলাম। 

দুঃখজনক ভাবে তরুণ নেতৃত্ব ও গঠনমূলক রাজনীতির পরিবর্তে প্রতিহিংসা এবং ব্যক্তি আক্রমণের রাজনীতি বেছে নিচ্ছে। উক্ত ঘটনাটি চাঁদপুরের শাহরাস্তির।’