আইএফআইসি ব্যাংকের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর আইএফআইসি ব্যাংক উপ-শাখার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে অচেতন অবস্থায় পুলিশ, ফায়ার কর্মী ও স্থানীয়রা এসে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আজ রবিবার দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে থানা রোড হাবিব কমপ্লেক্সের ২য় তলায় অবস্থিত বাজিতপুর শাখার উপ শাখা কুলিয়ারচর আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মরতদের নিজ কার্যালয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, ‘নতুন একাউন্ট খোলার জন্য আনুমানিক একটার দিকে ব্যাংকে প্রবেশ করি । পরে একাউন্ট খুলতে ছবি তোলার জন্য নিচে গিয়ে প্রায় ২০মিনিট পর ব্যাংকে প্রবেশ করতেই অন্ধকারে সিকিউরিটি গার্ডের এলোমেলো কথা বলতে দেখে আর কাউকে দেখতে না পেয়ে ব্যাংক থেকে বাহিরে চলে যাই। পরে দেখি কয়েকজনকে অচেতন অবস্থায় ধরাধরি করে গাড়িতে তুলছে।’
বাজার ব্যবসায়ী ইমন বলেন, ‘ব্যাংকের কাজে প্রবেশ করতেই দেখি ব্যাংকের নিচে ফ্লোরে একজন ভদ্রলোক শোয়া অবস্থায় আছে। পরে থাকে ধরাধরি করে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে যায়। কিন্তু অচেতন থাকায় তেমন কিছুই জানতে পারিনি।’
বিএনপি নেতা মুছা বলেন, ‘ব্যাংকের ঘটনা শুনে এসে দেখি একজন নারী ও পুরুষ কর্মী অচেতন অবস্থায় রয়েছে। পরে সরকারি হাসপাতাল নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুটা জ্ঞান ফেরলে নারীকর্মী তার বোনের নাম্বারে যোগাযোগ করে হাসপাতালে বলে। কিন্তু ঘটনার বিষয়ে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।’
জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে থেকে পাশ্ববর্তী উপজেলা বাজিতপুর আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-শাখা হিসেবে ব্যাংকটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। শাখারটির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৬ জন।
এদিকে দুপুর একটার দিকে কয়েকজন গ্রাহক গিয়ে দেখতে পান প্রধান ফটকের সামনে একজন অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। ভেতরে যার যার অবস্থানে পড়ে ছিলেন অন্যরাও। তারা প্রত্যেকে বমি করছিলেন। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসেন। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দেখতে পান ক্যাশ কাউন্টারের সামনের গ্লাস ভাঙ্গা। পরে অচেতন অবস্থায় তাদের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বাজিতপুর আইএফআইসি ব্যাংক থেকে আসা দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তারা কিছু বলতে রাজি হননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আদনান আখতার বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায় দুজন লোক চিকিৎসা করতে এলে জানতে পারি তারা আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তা সৌমিক জামান খান ও আরেকজন নিরাপত্তা কর্মী কামাল। তারা দুজনেই অচেতন অবস্থায় ছিলেন। বমিও করছিলেন। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা বিশেষ ওষুধের মাধ্যমে তাদের অচেতন করা হয়ে থাকতে পারে।’
এ ঘটনায় ভৈরব-কুলিয়ারচর এএসপি সার্কেল নাজমুস সাকি জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানা পুলিশসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় সিসি ফুটেজ সংগ্রহের কাজ চলমান। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনায় কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও সাবিহা ফাতেমা তুজ-জোহরা বলেন, ‘ব্যাংকের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ ব্যাংকটি তালাবদ্ধ রেখে অসুস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীদের চিকিৎসা করতে মেডিকেলে গেছেন।’
তবে ব্যাংকটি খুললে সিসি ফুটেজ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।