দুলাভাইয়ের মাথার হাড়ের টুকরো পকেটে নিয়ে ঘুরছেন শ্যালক!

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
৩০ মে ২০২৫, ২০:৫৮
শেয়ার :
দুলাভাইয়ের মাথার হাড়ের টুকরো পকেটে নিয়ে ঘুরছেন শ্যালক!

গাজীপুরের শ্রীপুরে দিনমজুরকে পিটিয়ে মাথার খুলি গুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। হামলায় মাথা আট টুকরো হয়ে মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার চার দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত থানায় মামলা দায়ের করতে পারেনি ভুক্তভোগী পরিবার। তাই বিচারের দাবিতে দুলাভাইয়ের মাথার হাড়ের টুকরো পকেটে নিয়ে ঘুরছেন শ্যালক আবুল কাসেম (৪২)।

গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের চিনাশুকানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলা শিকার মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের চিনাশুকানিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। গত চার দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউ) রয়েছেন।

এ ঘটনার পরপরই জাহাঙ্গীরের স্ত্রী বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু চার দিন পার হলেও আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি।  

অভিযুক্তরা হলেন একই গ্রামের মো. লেহাজ উদ্দিন (৪৫), শাহিনা খাতুন (৪০), সালমান (২০), সামছুন্নাহার (৪২), ওয়াবয়দুল আকন্দ (৪০), মজিবুর রহমান (৪৫)। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

জানা যায়, অভিযুক্তদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল জাহাঙ্গীরের। গত কয়েক দিন ধরে তারা প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে। গত মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তারা আবারও জমি দখল করতে যায়। এ সময় জাহাঙ্গীর বাধা দিলে অভিযুক্তরা তাকে ধারালো দা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।

প্রতিপক্ষের হামলায় জাহাঙ্গীরের মাথার খুলি ৮ টুকরো হয়ে মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। গত চারদিন ধরে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউ) জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন জাহাঙ্গীর।

জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আয়েশা আক্তার বলেন, ‘তারা আমার স্বামীকে মেরে ফেলতে হামলা করে। এলোপাতাড়ি কোপ ও লাঠির আঘাতে তার মাথা সাত থেকে আট টুকরো হয়ে পড়ে। তার মাথার হাড়ের টুকরো পকেটে নিয়ে আমার ভাই এখনও ঘুরছে। আমি থানায় মামলা করতে চারদিন ধরে ঘুরছি। এখনো মামলা করতে পারিনি।’

তবে এই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত লেহাজ উদ্দিন পলাতক রয়েছেন। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন, ‘এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলার পর অভিযুক্তদের দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’