ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হলো আ. লীগ নেতার বাপ-দাদার কবর
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় সংস্কারের নামে কবরস্থান কমিটি আওয়ামি লীগ নেতার বাপ-দাদার বাঁধাই করা ৪টি কবর ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কবর ভাঙ্গা সংক্রান্ত কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
গত বুধবার উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের উনুখাঁ পাগলা পীর কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে কবরস্থান কমিটি বলছে, ‘সংস্কারের স্বার্থে সবার সঙ্গে আলোচনা করে ওই ৪টিসহ আরও ১০/১২টি কবর ভাঙ্গা হয়েছে। এতে আমরাও মর্মাহত ও দুঃখিত।’
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অপসারিত চেয়ারম্যান ও সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম হিরো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে রফিকুল ইসলাম হিরো উল্লেখ করেন, ‘আমার বাবা আব্দুল জলিল বিএসসি উনুখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সহকারী শিক্ষক এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি মারা গেলে উনুখাঁ কবরস্থানে পাগলা পীর (রাঃ) মাজারের পূর্বপাশে ঈদগাহ মাঠের প্রাচীরের উত্তরপাশে দাফন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম, দাদা রাজ উদ্দিন প্রমানিক ও ছোট দাদা খলিলুর রহমান মারা গেলে তাদের বাবার কবরের পাশাপাশি দাফন করা হয়। প্রতিটি কবর ইট দিয়ে বাঁধানো ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কবরস্থানের নতুন কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটির তত্ত্বাবধানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে গত ২৮ মে ওই ৪টি কবর ভেকু মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বৃহস্পতিবার লিখিত এই অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে উনুখাঁ কবরস্থান কমিটির সাধারন সম্পাদক ও উনখাঁ পাগলা পীর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কবরস্থানটি অনেক পুরাতন । কবরস্থানটি সংস্কারের প্রয়োজন হওয়ায় বিধি মোতাবেক সবার সর্বসম্মতিক্রমে কবরস্থান সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে। কবরস্থানে থাকা বেশকিছু গাছ বিক্রি করেছি। সীমানা প্রাচীর ও মাটি ভরাট করতে হবে। এইজন্য ভেকু মেশিন দিয়ে কবরস্থানে মাটি লেবেল ও গাছের শিকর তোলার সময় ওই ৪টি করবসহ আরও ১০/১২ টি কবর ভেঙ্গে গেছে । এটা কোনো প্রতিহিংসা থেকে করা হয়নি। করবস্থানে উন্নয়নের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে । কবরগুলো ভাঙ্গায় এতে আমরাও মর্মাহত ও দুঃখিত।’
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া আবু সালে মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, ‘কবর ভাঙ্গার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করব। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক কিনা, তা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’