বিয়ের খবর শুনে প্রেমিকাকে ছুরিকাঘাত করলেন ছাত্রলীগ নেতা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের বিরুদ্ধে এক স্কুল শিক্ষিকাকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের হাছননগর এলাকায় এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ছুরিকাঘাতের পর পার্থ নিজের শরীরকেও ক্ষতবিক্ষত করেন। এ ঘটনায় পার্থকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও আহত শিক্ষিকার স্বজনরা জানান, স্কুল শিক্ষিকা ও পার্থ একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে মেয়েটি বর্তমানে স্থানীয় একটি প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন।
আরও জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়েটি তার ভাবিকে নিয়ে শহরের হাছননগর এলাকার একটি দোকানে কেনাকাটা করতে আসেন। এক পর্যায়ে পার্থ মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে হাতে থাকা ধারাল ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যান। পরে মেয়েটির স্বজনরা গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার মেয়েটির উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এদিকে সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশ পার্থকে শহরে ধোপাখালী শ্মশানঘাট এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পার্থকে গ্রেপ্তার করে।
মেয়েটির এক স্বজন জানান, শাবিপ্রবির ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ মেয়েটিকে হুমকি-ধামকি দিতেন। তারা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ার পূর্ব পরিচিত ও প্রেমের সম্পর্ক থাকতে পারে। মেয়েটির বিয়ের খবর শুনে পার্থ তাকে হুমকি দিতে থাকে। হুমকির বিষয়টি পার্থর পরিবারকে জানানো হলে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়েটিকে অনুসরন করে তিনি শহরের হাছননগর এলাকার মার্কেটে আসেন। এক পর্যায়ে তাকে ডেকে নিয়ে ধারাল ছুরি দিয়ে ১০টি আঘাত করেন পার্থ। তার মধ্যে ৮টি গভীর ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে।
উল্লেখ্য, ছাত্রলীগ নেতা সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নৌকাখালী এলাকায়। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর তিনি সিলেটে আত্মগোপনে ছিলেন। মূলত মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে তিনি সিলেট থেকে সুনামগঞ্জে চলে আসেন।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মনিবুর রহমান বলেন, ‘ছেলে ও মেয়ে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পূর্ব পরিচয় ছিল। এরই সূত্রে ধরে পার্থ মেয়েটিকে শহরের হাছননগর এলাকায় ডেকে নিয়ে ছুরিঘাত করে আহত করেন। তিনি পালিয়ে শহরের ধোপাখালী শ্মশানঘাটে আত্মগোপন করে নিজের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে নিজের শরীরেও আঘাত করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পার্থকে গ্রেপ্তার করে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার করার পর সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পার্থকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে রেফার্ড করা হয়। ওই মেয়েটিও বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’