যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরের সদর উপজেলায় স্ত্রী শান্তাকে (২২) যৌতুকের জন্য হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসাদ ওরফে বাচ্চু (৪৩) রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার কানাই মাতুব্বর বাড়ি গ্রামের মো. ছাত্তার শেখের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসাদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ প্রহরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর রাতের কোনো এক সময় যৌতুকের জন্য নিজ স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যা করেন আসাদ ওরফে বাচ্চু। এরপর মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যান তিনি।
এই ঘটনার তিনদিন পর গত ২৮ অক্টোবর ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের মা জরিনা বেগম। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন মৃত্যুর তিন মাস পূর্বে আসাদ তার মেয়েকে বিয়ে করেন। এরপর যৌতুকের জন্য চাপ দেওয়াসহ স্ত্রীকে নির্যাতন করলে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়। পরবর্তীতে আসাদ নিজের দোষ স্বীকার করে পুনরায় তার স্ত্রীকে বিয়ে করেন।
এরপর সদর উপজেলার ডিগ্রিচর ইউনিয়নের দিরাজতুল্লাহ মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের এমবিআই এগ্রো ফার্মে স্বামী-স্ত্রী মিলে দুইজনেই চাকরি শুরু করেন। সেখানে তাদের মধ্যে পুনরায় যৌতুক নিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন শুরু করেন আসাদ। একপর্যায়ে ২৫ অক্টোবর রাতে স্ত্রীকে হত্যা করে তিনি পালিয়ে যান তিনি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ মামলার এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি। মামলাটিতে মোট ১০ জন সাক্ষী দেয়। সকল আলামত ও সাক্ষীদের জবানবন্দীতে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দেন।
এদিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসাদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী থানায় তার প্রথম স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৃত্যুর ঘটনায় আরেকটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।