‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা আগের নির্বাচন থেকেও খারাপ হবে’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন হতে হবে সংস্কারের ভিত্তিতেই। নির্বাচন শেষ করে তারপর সংস্কার করবেন, এটা হবে না। আপনি যখনই নির্বাচন চান, করুন। কিন্তু তার আগে সংস্কার করতে হবে। কারণ, এই সংস্কারই আগামী নির্বাচনের বৈধতার ভিত্তি। যদি সত্যিই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান, তবে সংস্কার ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। সংস্কার না হলে এবার যে নির্বাচন হবে, তা আগের যেসব নির্বাচন দেশবাসী দেখেছে, সেগুলোর চেয়েও খারাপ হবে।’
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সংস্কার সমন্বয় কমিটি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তর: মৌলিক সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আজ যারা নির্বাচন চাই বলে স্লোগান দিচ্ছেন, তাদের অনেকেই প্রকৃতপক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষপাতি নন। তারা নির্বাচনকে কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চান। যারা মৌলিক সংস্কারের কথা বলছেন, তারাই আসলে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। অর্থাৎ এনসিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এখানে উপস্থিত, তারা মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য প্রদর্শন করেছেন। তাদের উদ্দেশ্য কেবল ক্ষমতায় যাওয়া নয়, বরং দেশের শান্তির জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যখনই কোনো দল দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তখনই তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। ১৯৭২ সালে একচেটিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েই বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিএনপি ২০০১ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েই চতুর্দশ সংশোধনী আনে। যার ফলশ্রুতিতে দেশে লগি বৈঠার রাজনীতি শুরু হয়, ঘটে রাজনৈতিক সহিংসতা, লাশের ওপর নৃত্য চলে ঢাকায়। আওয়ামী লীগ এটিকে বলেছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। এই সহিংসতার পথ ধরেই এসেছিল ১/১১। প্রণব মুখার্জি তার বইয়েও লিখেছেন, কীভাবে সেই সময় আওয়ামী লীগ ও ১/১১ সরকারের মধ্যে সমঝোতা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি, উচ্চকক্ষ থাকা প্রয়োজন, তবে তা যেন সংরক্ষিত নারী আসন ধাঁচের না হয়। বরং এটি হতে হবে জনগণের ভোটের অনুপাতে। এতে ছোট ও মাঝারি দলগুলো যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে, তাদের জায়গা হবে। আর একজন ব্যক্তির ইচ্ছায় রাষ্ট্রীয় চরিত্র বদলে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করা যাবে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।