প্রবাসী আয় বাড়াতে দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই: নূর আলী

সাভার প্রতিনিধি
২৫ মে ২০২৫, ২০:০৭
শেয়ার :
প্রবাসী আয় বাড়াতে দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই: নূর আলী

প্রবাসী আয় বাড়াতে দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহা. নূর আলী। আজ রবিবার দুপুরে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার ইউনিক ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার ও বোরাক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপী ইংরেজি ভাষা শিক্ষার কর্মশালা। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ইউনিক গ্রুপের উদ্যোগে সাভারে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার কর্মশালা। অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চুয়ালি উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি মূলত ৩ খাতের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। কৃষি, গার্মেন্টস ও প্রবাসী আয়। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির জন্য ভাষা শিক্ষা ও দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে সহজেই উচ্চ বেতনে জাপান, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ কর্মী ফিলিপাইনের প্রবাসে কাজ করে। তাদের প্রবাসী আয় বাংলাদেশের চেয়ে দ্বিগুণ শুধুমাত্র ইংরেজির কারণে।’


ইউনিক গ্রুপের এমডি আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র ইংরেজি ভালো না জানার কারণে আমরা প্রবাসে প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়ছি মেধা থাকা সত্ত্বেও। ক্যারিয়ার গঠনে ইংরেজি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তা ভুক্তভোগী প্রবাসীরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। বাংলাদেশের শ্রমবাজারেও ভারত ও শ্রীলংকার ইংরেজিতে দক্ষ কর্মীরা অতিরিক্ত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। আমাদের শ্রমবাজারের ঘাটতি পোষাতে ভারত ও শ্রীলংকা থেকে ইংরেজিতে দক্ষ কর্মী আনতে হয়। পেশাগত প্রয়োজনে ইংরেজি শেখার বিকল্প নেই। যদিও দুঃখজনক হলেও সত্য যে কোনো কর্মকর্তা পর্যায়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইংরেজিতে প্রত্যাশিত দক্ষ জনবল পাওয়া যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ১৬৮টি দেশে কাজ করছে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ৩২ লাখ কর্মী (প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি)। জিডিপিতে প্রবাসী আয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দিন দিন প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ কাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। শ্রমবাজারে ভাষাজ্ঞান একটি শক্তি। যে কোনো শ্রমবাজারে অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয় ভাষাজ্ঞান। শুধুমাত্র ইংরেজি ভালো জানার জন্য আমাদের দেশের কর্মীদের তুলনায় ফিলিপাইন, ভারত ও শ্রীলংকার কর্মীদের বেতন দ্বিগুণ বা তারচেয়েও বেশি বৈদেশিক শ্রমবাজারে।’

নূর আলী বলেন,‘জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে দেশে ইংরেজি ভাষা চর্চার ব্যবস্থা করে এ ভাষায় দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। ভাষাই বয়ে আনতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনা। তাই ভাষাচর্চার ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে নিজেদের আরও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’

কর্মশালায় মূল আলোচক ও প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান সাইফুরস প্রাইভেট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান খান। এর মাধ্যমে ইউনিক গ্রুপের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সকল শিক্ষার্থীদের সহজ উপায়ে ইংরেজিত ভাষায় দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি সঠিকভাবে ইংরেজি ভাষার ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

ওয়ার্কসপ মূল উদ্দেশ্য, দেশ ও দেশের বাহিরে ইংরেজি ভাষার ওপর পারদর্শী করাসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন আলোচকরা। ইউনিক ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার ও বোরাক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিনশতাধিক শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী সরাসরি এই কর্মশালায় অংশ নেন।

ওয়ার্কশপে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিক গ্রুপের পরিচালক (এইচআর ও অ্যাডমিন) মো. আব্দুল মোতালেব, জেনারেল ম্যানেজার (আইটি) কৌশিক আহম্মেদ, ইউনিক ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ট্রেনিং ও অপারেশন) জাহেদুল হক তুষার এবং বোরাক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।