৯ বছর পর দেশে ফিরেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
বরগুনায় অপহরণের পর আলোচিত অনিক চন্দ্র রায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. সালাউদ্দিন গাজীকে দীর্ঘ ৯ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভারতে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর দেশে ফিরলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান। এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তালতলী উপজেলার ফকিরহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সালাউদ্দিন গাজী বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের কাঁঠালতলী এলাকার আবদুস ছত্তার গাজীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটার দিকে বরগুনা পৌর শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুবল চন্দ্র রায়ের ছেলে অনিক চন্দ্র রায় বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে অনিকের বাবার মোবাইলে কল দিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বিষয়টি জানানো হলে পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জড়িতদের শনাক্ত করে।
পরবর্তীতে অনিক অপহরণ ও হত্যা মামলায় সালাউদ্দিন গাজীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মুক্তিপণ আদায়ের পর অনিককে ডিশ লাইনের তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। ঘটনার ১৭ দিন পর বরগুনা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সেফটি ট্যাংক থেকে অনিকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আদালতে মামলার বিচার শেষে প্রধান আসামি সালাউদ্দিন গাজীকে মৃত্যুদণ্ড, দুইজনকে যাবজ্জীবন এবং অপর তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার আগেই সালাউদ্দিন ভারতে পালিয়ে আত্মগোপন করে। সম্প্রতি তার দেশে ফেরার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
অনিকের বাবা সুবল চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার ছেলেকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মুক্তিপণের টাকা নিয়েও তারা কথা রাখেনি। দীর্ঘ ৯ বছর পর প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করায় আমরা স্বস্তি পেয়েছি। এখন চাই দ্রুত তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হোক।’
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সালাউদ্দিন গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
