আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ তৈরি হওয়ায় লন্ডনে সম্পদ জব্দ হয়েছে: গভর্নর

অনলাইন ডেস্ক
২৪ মে ২০২৫, ১৬:৩১
শেয়ার :
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ তৈরি হওয়ায় লন্ডনে সম্পদ জব্দ হয়েছে: গভর্নর

বাংলাদেশের পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ তৈরি হয়েছে এবং সে কারণে লন্ডনে সম্পদ জব্দ হয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম–সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ঋণ সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের সম্পদ জব্দের বিষয়ে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, ‘সম্প্রতি আমি লন্ডন সফর করেছিলাম। সেখানে অর্থপাচার নিয়ে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও বলেন যে আমাদের চুরি করা অর্থ ফেরত নিয়ে আসব। এটা আমাদের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। তিনি সব জায়গায় সেই প্রচেষ্টাও চালাচ্ছেন। এটারই অংশ হিসেবে আমরা এখন দেখছি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অর্থপাচার নিয়ে একটা চাপের মধ্যে রয়েছে।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, আল–জাজিরাসহ বৈশ্বিক গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে বড় বড় নিবন্ধ লিখছে। ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা সমর্থন দিচ্ছেন। এর বাইরে ব্রিটিশ এনজিও যারা আছে, তারাও এটাকে সমর্থন করছে। ফলে আমি মনে করি, একটা চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেই চাপের ফলে আজ আমরা দেখলাম যে এনসিএ (যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি) কিছু সম্পদ জব্দ করেছে।’

জব্দ হওয়া সম্পদ কত দিনের মধ্যে দেশে ফেরত আসতে পারে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জব্দের ঘটনা দেশে ফেরত আনার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। এটি আসবে বিচারের পর। কিন্তু জব্দের ফলে বিচার শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত তারা এই সম্পদগুলো আর বিক্রি করতে পারবেন না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। এখন বিচারক সিদ্ধান্ত নেবেন যে সেই সম্পদ তার (যুক্তরাজ্যের), না বাংলাদেশের। আমরা এখন আইনি প্রক্রিয়াটা শুরু করব।’

যুক্তরাজ্য ছাড়া আরও কিছু দেশে এ ধরনের সম্পদ রয়েছে বলে বিভিন্ন সময় সংবাদে উঠে এসেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে গভর্নর বলেন, ‘সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। গত সপ্তাহে আমি দুবাই গিয়েছিলাম। সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। লন্ডনে আবার যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া অর্থপাচার নিয়ে আন্তর্জাতিক একটা সম্মেলন করারও পরিকল্পনা রয়েছে।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এটা স্মরণ করে দিতে হবে যে এই সম্পদ রাখা নৈতিকতাবিরোধী, এটা রাখা ঠিক নয়। এটা যার সম্পদ, যে জনগণের টাকা, তাদের ফেরত দিয়ে দেওয়া উচিত। সেই ব্যাপারে তারা যেন তাদের তৎপরতা দেখায়, এটাই আমাদের আশা।’

পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক ও বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং।