এখনও ত্রাণের অপেক্ষায় গাজা
জাতিসংঘের মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, গাজার সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে এখনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেনি। ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর গত সোম ও মঙ্গলবার ১০০ ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। এসব ট্রাক গাজায় প্রবেশের পরও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। এর মধ্যে গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের হামলায় গতকাল ভোর থেকে ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, স্কুল কোনো কিছুই ইসরায়েলের টার্গেট থেকে বাদ যাচ্ছে না। খবর আল জাজিরা ও বিবিসি।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ ইসরায়েলের নতুন আগ্রাসনের কঠোর সমালোচনা করছে। এমনকি ইসরায়েলের সাবেক নেতৃবৃন্দও নেতানিয়াহুর যুদ্ধবাজ কৌশলের নিন্দা জানিয়েছেন। তবে এতে গাজাবাসীর দুর্দশা লাঘবের উল্লেখযোগ্য কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘের বিশ^ খাদ্য কর্মসূচির একজন প্রতিনিধি বলেছেন, যে পরিমাণ সহায়তা প্রবেশের কথা রয়েছে তা ‘পর্যাপ্ত নয়’। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত খুব কম ট্রাকই ক্যারেম শ্যালোম (সীমান্ত ক্রসিং) অতিক্রম করেছে। যদিও এ নিয়ে ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের কাজ চলছে। ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির একজন সদস্য বলেছেন, হামাস যেন সহায়তা চুরি করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে চাইছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
কী বলছে গাজাবাসী : আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কোনো সাংবাদিককে গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এমন পরিস্থিতিতে বিবিসি ফোন, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে গাজার বাসিন্দাদের পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। মধ্য গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত গ্রাফিক ডিজাইনার আদহাম বলেছেন, সত্যি বলতে, এখানের পরিস্থিতি কীভাবে বর্ণনা করব আমি জানি না। আমি আজ সারা দিন আটার সন্ধানে কাটিয়েছি, কোথাও আটা পায়নি। পরিস্থিতি দিনকে দিন কঠিন হয়ে উঠছে।
হৃৎপিণ্ডে অপারেশনের শিশু ফের গাজায় : সাত মাস বয়সী নিভিন। গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে হৃৎপিণ্ডে একটি ত্রুটি নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। এর পর জর্ডানে তার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়। কিন্তু পরে তাকে আবারও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাতেই ফেরত পাঠানো হয়েছে। নিভিনের মা ৩৩ বছর বয়সী এনাস আবু দাক্কা জানান, যুদ্ধ তার জন্য খুবই কঠিন ছিল। তার ওজন বাড়ছিল না, সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ত। তার একমাত্র বেঁচে থাকার সুযোগ ছিল গাজার বাইরে চিকিৎসা নেওয়া। মার্চের শুরুতে জর্ডান এটি সম্ভব করেছিল। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর নিভিনসহ ২৯ শিশুকে জর্ডানে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাও সফল হয়। কিন্তু ১২ মে কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের চিকিৎসা শেষ হয়েছে। এখন তাদের গাজায় ফিরে যেতে হবে। এত হতবাক হয়ে পড়েন এনাস। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যুদ্ধবিরতি থাকায় অবস্থায় আমরা চলে গেলাম কিন্তু যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়ার পর কীভাবে আমাদের এখানে আমাদের ফেরত পাঠাতে পারে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস