সাম্য হত্যাকাণ্ড ঘিরে ‘নোংরা রাজনীতি’ বন্ধের আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক
২০ মে ২০২৫, ১৭:১৮
শেয়ার :
সাম্য হত্যাকাণ্ড ঘিরে ‘নোংরা রাজনীতি’ বন্ধের আহ্বান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যাকাণ্ড ঘিরে নোংরা রাজনীতি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার ঢাবির আইইআর গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তারা।

সাম্যের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে তারা আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লং মার্চ করার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

সাম্যের বন্ধু, ঢাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আল নাহিয়ান বলেন, ‘গত ১৩ মে রাতে আমাদের বন্ধু শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সাম্য সবার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী, কিন্তু আমরা দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি সাম্যের হত্যাকাণ্ডের পর তাকে নিয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো বিভাজন ও নোংরা রাজনীতি করছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক দলাদলি আমাদের আশাহত করেছে। আমাদের প্রত্যাশা, সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যবদ্ধ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটি দুঃখজনক ব্যাপার হলো সাম্যকে নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের বাজে ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হচ্ছে। তার চরিত্রহননের চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কুচক্রী মহল এই ঘৃণিত কাজ করছে, তাদের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি আইনের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।’

সংবাদ সম্মেলনে সাম্য হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। দাবিগুলো হলো–

১. শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যাকারী সকলকে দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।

২. হত্যার আশেপাশের এলাকার সকল সিসিটিভি ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।

৩. ঘটনার সময় হত্যায় সহযোগীদের জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। যেসব পুলিশ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের দ্রুত জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

৪. শাহবাগ থানার পাশে যে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সর্বোপরি শাহবাগ থানার আসামি ধরার ক্ষেত্রে স্পষ্ট গাফিলতির জবাবদিহিতা করতে হবে।

৫. সাম্যকে হত্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতি দৃশ্যমান। তার জানাজার সময়ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চলেছে এবং পরের দিন অর্ধদিবস শোক ঘোষণা করার প্রহসন করেছে। এই ধরনের প্রহসন ও গাফিলতি আমরা আর মেনে নেব না। প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের যে কোনো প্রয়োজনে আরও তৎপর হতে হবে।

৬. উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত ও বিচারের নিয়মিত ফলোআপ নেওয়া এবং দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ তৎপর থাকতে হবে এবং সেখানে সাম্যের পরিবার, বন্ধু ও সহপাঠীদের যুক্ত রাখতে হবে।

৭. ‘সাম্যের বিচার নিশ্চিতকরণ কমিটি’ করতে হবে, যাতে তদন্ত কর্মকর্তা, উপাচার্য, প্রক্টর, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক, শিক্ষক ও সহপাঠীদের প্রতিনিধি যুক্ত থাকতে হবে। আজকের মধ্যে এটি নিশ্চিত করতে হবে।

৮. সাম্য হত্যার বিচার নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব সংগঠন প্রতিবাদ জানায়নি, তাদের আমাদের সঙ্গে এক হয়ে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

৯. ক্যাম্পাসসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।