প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যা করলেন বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক কুড়িগ্রাম
১৩ মে ২০২৫, ১৭:৫৮
শেয়ার :
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যা করলেন বাবা

কুড়িগ্রামের সদর উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের মেয়েকে হত্যা করেছেন জাহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের বাবা, মা এবং চাচিকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল সোমবার রাতে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, গত শনিবার সকালে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের কাগজিপাড়া গ্রামে নিজ বাড়ির পাশের একটি ভুট্টাক্ষেতে নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতি খাতুনের (১৫) মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথা ও শরীরে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।

নিহতের পরিবার শুরুতে দাবি করে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ জান্নাতিকে অপহরণ করে হত্যা করেছে। নিহতের চাচা খলিল হক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলাও দায়ের করেছেন।

তবে স্থানীয়দের সন্দেহ এবং পুলিশের গোয়েন্দা তদন্তে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র। তদন্তে জানা যায়, প্রতিবেশী মজিবর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের জমি বিরোধের জেরে তাকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকেই হত্যা করেন জান্নাতির বাবা জাহিদুল ইসলাম, মা মোর্শেদা বেগম এবং বড় ভাইয়ের স্ত্রী শাহিনুর বেগম।

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, গভীর রাতে জান্নাতিকে ঘরে ডেকে নিয়ে রড ও দা দিয়ে মাথা ও শরীরে আঘাত করে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ভুট্টাক্ষেতের পাশে ফেলে দেওয়া হয়। আলামত নষ্ট করতে খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তাররা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মামলার বাদী খলিল হকও এ হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। খলিল, জাহিদুল এবং তাদের সহযোগীরা অতীতেও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে গরু-ছাগল চুরি, খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া এবং নিজের ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী হালিমার ওপর একাধিকবার হামলা চালানোর মতো ঘটনা।

ঘটনার পর থেকেই খলিল হক পলাতক রয়েছেন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ এবং জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের কর্মকর্তা বজলার রহমান বলেন, ‘এটি একটি নির্মম ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি।’