লজ্জায় মুখ লুকিয়ে থাকতে হয়েছে: সানী
জৌলুশ হারিয়েছে সিনেমার শিল্পীদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। গেল কয়েক বছর ধরে এই সমিতির কার্যক্রম নিয়ে বিরক্ত শিল্পীরা। শুধু তাই নয়, শিল্পীদের দ্বন্দ্ব গড়িয়েছে আদালতেও। যা নিয়ে কাদা-ছোড়াছুড়িও কম হয়নি।
এক কথায়- শিল্পী সমিতি নিয়ে বিরক্ত সিনিয়র শিল্পীরাও। ইতিমধ্যেই সমিতির বিষয়ে কথা বলেছেন নবীন-প্রবীণ শিল্পীদের অনেকেই। তারই ধারাবাহিকতায় অভিনেতা অমিত হাসান গতকাল সোমবার বলেন, ‘শিল্পী সমিতি আছে কিন্তু শিল্পী নেই।’ তার এই কথার সঙ্গে একমত হয়েছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানীও। তিনি অবশ্য আরও কঠিনভাবে বলেছেন, ‘আমাদেরকে একরকম মেরে ফেলা হয়েছে।’
ওমর সানীর কথায়, ‘এমন শিল্পী সমিতি কখনো দেখিনি। এমন দুরবস্থা হবে সেটাও কখনো মনে করিনি। জায়েদ খানের মত মানুষ এই সমিতিতে এসে যা ইচ্ছে তাই করেছে। নিপুণ জোড় করে দায়িত্ব পালন করেছে। তারা শিল্পীদের মধ্যে কোটি টাকার খেলা খেলেছে। সঙ্গে তো নানা ধরণের নোংরামি ছিলই। এগুলোর সমালোচনা শিল্পীরা নিতে পারিনি। আমাদের মত শিল্পীদের লজ্জায় মুখ লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। বলতে পারেন, শিল্পী হিসেবে আমাদের একরকম মেরে ফেলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
শিল্পী সমিতিতে নিজের সদস্যপদটাও রাখতে চান না এই অভিনেতা। সানী বলেন, ‘আমি এখন খুবই বিরক্ত। শিল্পী হিসেবে পরিচয় দিতে আর ভালো লাগে না। এখন আমি চাই, শিল্পী সমিতি থেকে যেন আমার সদস্যপদ বাতিল করে দেওয়া হয়। তাহলে আমি বেশি খুশি হবো। কারণ, নির্বাচনের সময় আমাকে ও মৌসুমীকে নিয়ে সবাই নানান ধরণের প্রশ্ন করে। যেগুলো খুবই বিরক্তিকর লাগে। তার চেয়ে দূরে থেকে কাজ করাই ভালো।’
নায়করাজ রাজ্জাক, খলিল, আলমগীর, মান্না, রুবেল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিজু আহমেদসহ অনেক গুণী শিল্পী এই সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন। তারা প্রতিনিয়ত সমিতিতে যেতেন এবং সিনেমা নিয়ে আলোচনা করতেন। পরবর্তীতে শাকিব খান সভাপতি থাকা অবস্থায় সমিতি ছিল তারকাবহুল। সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পীদের মেলবন্ধন ছিল। কিন্তু এখন আলমগীর, সোহেল রানা, উজ্জল, রুবেল, শাবনূর, শাকিব খান, মৌসুমী, অপু বিশ্বাস, বুবলী, আরিফিন শুভ, সিয়াম, শরিফুল রাজ, পরীমণিদের মত তারকাদের সমিতিতে দেখা যায় না।
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
ওমর সানীর কথায়, ‘এই সমিতিতে আমি কোনো না কোনো পোস্টে ৫-৬ বার দায়িত্ব পালন করেছি। সুন্দর করে সমিতিকে গড়ার চেষ্টা করেছি। আমরা সবসময় সিনিয়র শিল্পীদের কাজের কথা মাথায় রেখেছি। রাজনীতি তো থাক দূরের কথা, আমাদের মাথায় সিনেমা ছাড়া অন্য কিছুই ছিল না। সিনিয়র শিল্পীরা এখন অবহেলিত। তাদের নিয়ে চিন্তাই করা হয় না। তাদের ভেবে গল্প লেখা হয় না। আমি, রুবেল, রোজিনা, আমিন খান, বাপ্পারাজ কোনো সিনেমায় নেই। আমাদের জুনিয়রদের হাতেও কাজ নেই। এফডিফিসিতে যখন শুটিং চলবে তখন শিল্পীরা আসবেন শিল্পী সমিতিতে। কিন্তু আসল জিনিসটাই নেই।’
অভিনেতা আরও বলেন, ‘আমাদের কিংবদন্তি কবরী আপা, রাজ্জাক আঙ্কেল, হুমায়ুন ফরীদি ও ফারুক সাহেবসহ যারা প্রকৃত শিল্পী তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ মারা গেছেন। এখন আমাদের পালা। আমার মরে গেলে সব শেষ। তখন শিল্পী সমিতি শুরু হবে “ডি গ্রেড” শিল্পী থেকে। আগে যেটা ছিল “এ প্লাস”।’
আরও পড়ুন:
‘এভাবে বিয়ে করা নাকি অর্থহীন’