গাজীপুরে কর্মস্থলে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু

গাজীপুর প্রতিনিধি
১২ মে ২০২৫, ১৪:৫৯
শেয়ার :
গাজীপুরে কর্মস্থলে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু

গাজীপুরের জেএল ফ্যাশন লিমিটেড (সোয়েটার) কারখানায় কাজ করার সময় টিঠন মিয়া (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে লাঞ্চ বিরতি এ ঘটনা ঘটে।

নিহত টিঠন মিয়া নেত্রকোনা জেলা সদর উপজেলার লক্ষীপুর (দলপারামপুর) গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে। তিনি গত চার বছর ধরে কারখানার ফিনিশিং বিভাগের সাধারণ অপারেটর (পেকার) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, দুপুরের খাবারের বিরতির পর কাজ শুরু করলে টিঠন হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। পরে সহকর্মীরা তাকে কারখানার মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে আল-হেরা হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল থেকে আবার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ড করা হলে বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

টিঠনের মৃত্যুতে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে ক্ষতিপূরণ ও বকেয়া পরিশোধের দাবি জানান। পরে কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সাঈদ শিকদার তাদের সঙ্গে কথা বলে শ্রম আইনের আওতায় সব পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর কারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় টিঠনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইদা ইমরোজ জানান, অতিরিক্ত গরমে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে টিঠনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

জেএল ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেশন বিভাগের জিএম দুশান্ত কুমার বলেন, ‘টিঠন মিয়া লাঞ্চের পর কাজে ফেরেন এবং হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। কারখানার চিকিৎসক গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দেন এবং তিনি কিছুটা স্বাভাবিক ছিলেন। পরে আবার ব্যথা অনুভব করলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

তিনি আরও জানান, নিহত শ্রমিকের পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরিবারের কোনো সদস্য চাইলে কারখানায় চাকরি দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের জিএম সাঈদ শিকদার বলেন, ‘শ্রমিকদের অভিযোগ সঠিক নয়। অসুস্থতার সঙ্গে সঙ্গে তাকে চিকিৎসা দেওয়া ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ খান জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অতিরিক্ত গরমের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।’

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, ‘অসুস্থ হওয়ার পরপরই শ্রমিককে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।’