বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ এনে পুঁজিবাজার সংস্কারের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ মে ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ এনে পুঁজিবাজার সংস্কারের নির্দেশ

দীর্ঘদিনের ধস ও বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার প্রেক্ষাপটে দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে তিন মাসের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রবিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এক জরুরি বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি।

ক্রমাগত লোকসানের কারণে গত ৯ মাসে ৩০ হাজার বিনিয়োগকারী সব শেয়ার বিক্রি করে কেনাবেচার অ্যাকাউন্ট (বিও) বন্ধ করে দিয়েছেন। ৫৭ হাজার বিনিয়োগকারী নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। এ সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক এক হাজার পয়েন্টের বেশি কমেছে। এ অবস্থায় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নেতৃত্ব নিয়ে বাজারসংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন তুলছেন। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গতকাল রবিবার জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়) আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক এবং বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং গত ৯ মাসে নেওয়া সংস্কার উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্রিফিং দেন। তার আলোকে বৈঠকে আলোচনা হয় এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টার ৫টি নির্দেশনা হলো- সরকারের মালিকানাধীন বিদেশি বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে দ্রুত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; বেসরকারি খাতের সম্ভাবনাময় ও বড় বড় কোম্পানিকে প্রণোদনার মাধ্যমে বাজারে আনার উদ্যোগ; পুঁজিবাজার সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল এনে তিন মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন; পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম বা দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ; বড় কোম্পানিগুলো যেন ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে শেয়ারবাজার থেকে শেয়ার বা বন্ডের মাধ্যমে পুঁজি সংগ্রহে আগ্রহী হয়, সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ।

প্রেস সচিব আরও বলেন, এটা সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। আমরা আশা করছি, এই সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর হলে বাজারে সক্রিয়তা ফিরবে এবং বিনিয়োগকারীরা একটি কার্যকর ও প্রাণবন্ত পুঁজিবাজার দেখতে পাবেন।