‘তার কৃত কৃতিত্ব রয়ে যাবে চিরকাল’
দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই। গতকাল শনিবার বনানীর একটি হাসপাতালে ভোরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
‘বাংলাদেশের সংগীত জগতের একজন নক্ষত্রের পতন হলো, যা অপূরণীয়। মুস্তাফা জামান আব্বাসী সাহেব ছিলেন একজন সৎ মানুষ ও লোকগীতির অনেক অনেক জনপ্রিয় একজন শিল্পী। লোকগীতির সাথে আব্বাসী সাহেব প্রচুর ইসলামি গান এবং সেই সাথে হামদ ও নাতের অগ্রদূত ছিলেন।’ লোকগীতির কিংবদন্তি শিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসীর প্রয়াণে এভাবেই তাকে নিয়ে বলছিলেন বহু কালজয়ী গানের শিল্পী খুরশীদ আলম। তিনি মনে করেন, বাংলা লোকসংগীতে আব্বাসীর অভাব চিরকাল থেকে যাবে।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
শিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। লিখেছেন, ‘আমাদের মুস্তাফা জামান আব্বাসী! উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত আপাদমস্তক একজন শিল্পী যিনি কিনা কুরআন মজিদের বাংলা অনুবাদসহ নবীজি (স.) এর জীবনী ও আরও অনেক জ্ঞানগর্ভ বই লিখে গেছেন। বাংলাদেশের গানের ইতিহাস লিখতেন!’ আব্বাসীর সুমধুর কণ্ঠ নিয়ে কনকচাঁপা লিখেছেন, ‘বিটিভিতে আজানের জবাব এ তার কণ্ঠ শুনতাম আর ভাবতাম- এ কণ্ঠ বেহেশত থেকে আসছে। তাদের দুই কন্যা সামিরা ও শারমিনী দুইজনের সাথেই অন্তরঙ্গ সম্পর্ক আমার। কদিন আগে তাদের মা বিদুষী আসমা আব্বাসীজিও চলে গেছেন। আমি তাদের পুরো শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আল্লাহ যেন তাদের এ শোক সইবার শক্তি দেন।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের অমূল্য রতন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য এ ব্যক্তিত্ব শনিবার সকালে ইন্তেকাল করেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন, সাহিত্যাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন বলাই বাহুল্য। দুপুর ১টায় রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের স্থায়ী বাসিন্দা করে নেওয়ার অনুগ্রহ করুন।’ নজরুল সংগীতের গুণী শিল্পী ফেরদৌস আরা মুস্তাফা জামান আব্বাসীর স্মরণে বলেন, ‘বল্ নাহি ভয় নাহি ভয়, বল্ মাভৈ মাভৈ জয় সত্যের জয়’- এইসব গান যার শক্তিশালী কণ্ঠে গীত হতো, তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার কর্ম, তার কৃত কৃতিত্ব রয়ে যাবে চিরকাল বাংলার সংস্কৃতিতে। সংগীতশিল্পী মেহরীনও গভীর শোকাহত। তিনি জানান, মুস্তাফা জামান আব্বাসীর সাথে তিনি বহু কাজ করেছেন। তাকে হারানোর বেদনা আপনজন হারানোর বেদনার মতোই গভীর। বলা দরকার, সংগীতচর্চার পাশাপাশি গবেষক ও লেখক হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছিলেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। উপমহাদেশের খ্যাতিমান সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গুণী এই সংগীতশিল্পী। তার বাবা আব্বাসউদ্দীন আহমেদ ছিলেন পল্লিগীতির সম্রাট।
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল
আরও পড়ুন:
মারা গেলেন পরীমনির নানা