জিআই স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইলের জামুর্কীর সন্দেশ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
০১ মে ২০২৫, ১৪:৫৮
শেয়ার :
জিআই স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইলের জামুর্কীর সন্দেশ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কালিদাস মিষ্টান্ন ভান্ডারের ‘সন্দেশ’ পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি।এর মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইল জেলার চতুর্থ পণ্য হিসেবে এ স্বীকৃতি অর্জন করল এই জনপ্রিয় মিষ্টান্ন।

গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের কাছ থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক জিআই সনদ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প নকশা ও ট্রেডমার্ক বিভাগ।

২০২৪ সালের ১ এপ্রিল জামুর্কীর সন্দেশের জন্য জিআই স্বীকৃতির আবেদন করা হয়, যার নম্বর ছিল জিআই-৭৪। প্রায় এক বছর পর মিলল সেই কাঙ্ক্ষিত স্বীকৃতি।

জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে জামুর্কী অঞ্চলে বসবাস করতেন জমিদার ও হিন্দু সম্ভ্রান্ত পরিবারগুলো। গ্রামের মদন মোহন সাহা প্রথম মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি শুরু করেন। তার পুত্র কালীদাস সাহা পরে এই পেশায় যোগ দেন এবং দুধ, চিনি ও পাটালি গুড় ব্যবহার করে দুই রকমের সন্দেশ তৈরি করেন। তার হাতে তৈরি সন্দেশ ধীরে ধীরে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করে।

এখনো জেলার বিভিন্ন উৎসব, বিয়ে, ঈদ কিংবা পূজায় কালিদাসের সন্দেশ একটি অন্যতম উপাদান হয়ে থাকে। দেশি-বিদেশি অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিও এই মিষ্টির স্বাদ নিয়ে মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।তারা মনে করছেন, এটি শুধু একটি মিষ্টির স্বীকৃতি নয়, বরং তাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির গর্বের প্রতীক।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার জামুর্কি নামক স্থানে সাদামাটাভাবে স্থাপিত এই দোকান। চলার পথে বা উদ্দেশে নিয়েই দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসে এই সন্দেশ কিনতে। সমর সাহা বর্তমানে দোকানটি পরিচালনা করেন। তার বাবাও এই দোকান পরিচালনা করতেন। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় দোকানি এবং স্থানীয়দের মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে।

পাকুল্যা গ্রামের বাসিন্দা তপন সেট বলেন, ‘আমাদের এলাকার পণ্য জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। এই স্বীকৃতিতে বর্তমান সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের চেষ্টায় মির্জাপুরবাসীর চাওয়াকে সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। এটা এই এলাকার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।