বিদ্যুৎ সঞ্চালনে গ্রিডের উন্নয়ন প্রয়োজন: এডিবি
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা এবং বিরতিহীন নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের উৎসগুলোকে একীভূত করার জন্য আন্তঃসংযুক্ত ও আধুনিকায়নকৃত গ্রিড সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
একটি নতুন প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এডিবি জানিয়েছে, বিদ্যুৎ গ্রিডগুলোতে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বর্ধিত বিদ্যুতের নিরাপত্তা, লাখ লাখ পরিবেশবান্ধব কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিদ্যুৎ সুবিধা সম্প্রসারণসহ জ্বালানি পরিবর্তনের সম্পূর্ণ সুবিধা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত রাখছে। তবে এ বিশ্লেষণে বলা হয়, এই অঞ্চলটি বিশ্বব্যাপী বৈশ্বিক জ্বালানি রূপান্তরের অগ্রভাগে রয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে উন্নয়নশীল এশিয়ায় পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ ৯০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ৭২৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বৈশ্বিক বিনিয়োগের প্রায় ৪৫ শতাংশ। যদিও এই বিনিয়োগের বড় অংশই চীন থেকে এসেছে, তবুও ভারত এবং আরও সাতটি আঞ্চলিক উন্নয়নশীল দেশ ২০২২ সালে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের মাধ্যমে নতুন জাতীয় জ্বালানি সক্ষমতার ৭৫ শতাংশের বেশি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সহযোগিতায় পরিচালিত ‘এনার্জি ট্রানজিশন রেডিনেস অ্যাসেসমেন্ট ফর ডেভেলপিং এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক এডিবির এই প্রথম প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ডব্লিউইএফের বিদ্যুৎ সঞ্চালন সূচকের ওপর ভিত্তি করে এ অঞ্চলের দেশগুলো কতটা বিদ্যুৎ সঞ্চলনের জন্য প্রস্তুত, তা পরিমাপ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে জর্জিয়া, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড পরিচ্ছন্ন বিদ্যুতের জন্য তাদের নিয়ন্ত্রক কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া ২০১০ সাল থেকে ১০০ কোটির বেশি মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অঞ্চলটিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এডিবির জ্বালানি খাতের সিনিয়র পরিচালক প্রিয়ন্থা উইজয়তুনগা বলেন, ‘লো-কার্বন বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালন ব্যবস্থায় এর সুচারু সংযোজন নিশ্চিত করতে ডিজিটাল গ্রিড অবকাঠামোর সম্প্রসারণ অত্যাবশ্যক।’ তিনি বলেন, ‘২০৪০ সালের মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি প্রবৃদ্ধির দুই-তৃতীয়াংশ উৎপাদনের পূর্বাভাস থাকায় এই ভয়াবহ বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘাটতি পূরণের জন্য শক্তিশালী নীতি, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নসহ বহুমাত্রিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে।’
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের জ্বালানি ও উপকরণ বিভাগের প্রধান রোবের্তো বোক্কা বলেন, ‘এই বিশ্লেষণটিতে উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতিগুলোকে তাদের বিদ্যুৎ সঞ্চালন চাহিদা পূরণে যেসব সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’
প্রতিবেদনটি উল্লেখ করে, যদিও প্রতিটি দেশের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তাদের পরিচ্ছন্ন জ্বালানির পথ তৈরি করতে হবে, তবুও দেশের অভ্যন্তরীণ সংযোগ এবং অঞ্চলভিত্তিক আন্তঃসংযোগ- যেমন মধ্য-পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক দক্ষতা এবং বিদ্যুতের সাশ্রয়যোগ্যতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।