মাদ্রাসা পাস করে ডাক্তারি করতেন রেজাউল

উজিরপুর প্রতিনিধি
২৯ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২০
শেয়ার :
মাদ্রাসা পাস করে ডাক্তারি করতেন রেজাউল

বরিশালে মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন রেজাউল করিম। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

আজ উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামে রেজাউল করিমের মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল ইসলাম খান।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চিকিৎসক পরিচয়ে রেজাউল করিম জটিল সব রোগের চিকিৎসা দেন এবং সার্জারিও করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক রোগী ও নার্সকে যৌন হয়রানি, মারধর, সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। রেজাউল করিম নিজেকে কখনো সাংবাদিক পরিচয়, আবার কখনও টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক, ঢাকা ও বরিশাল শহর থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার মালিক ও প্রকাশক হিসেবেও পরিচয় দিতেন। তিনি উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামে গড়ে তুলেন মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ওই সেন্টারে বসেই বছরের পর বছর গ্রামের রোগীদের অপচিকিৎসা করছেন। তার অপচিকিৎসায় বহু রোগীর মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরণের অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, ওই ক্লিনিকে রোগীদের ভর্তির পরে চিকিৎসা প্রদান বা জটিল অপারেশন করার তথ্য ডায়েরি বা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেন না রেজাউল করিম। এতে তার কাজের কোনো প্রমাণ থাকে না। রোগীদেরকেও কোনো প্রমাণপত্র দেওয়া হয় না। এ ছাড়া তার সনদপত্রে লেখা-‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্দো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’। কিন্তু অনুসন্ধান করে এই নামে সনদপত্র প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি।

উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার মো. মাইনুল ইসলাম খান বলেন ‘তিনি ভারতের একটি সনদপত্র দেখান। এটার কোনো বৈধতা নেই। তার যেহেতু এমবিবিএসের সনদ নেই, তাই তার দেখানো এসব ডিগ্রির কোনো দাম নেই। তাকে ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ’

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুমি রানী মিত্র একটি অভিযান পরিচালনা করেন রেজাউল করিমকে বিভিন্ন ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।