আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায় বাংলাদেশ
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর ইস্যুতে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে। দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ চাইলে বাংলাদেশ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে তার আগে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা। গতকাল রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
কাশ্মীরে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অবস্থান কী? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা শান্তি চাই দক্ষিণ এশিয়ায়। আমরা জানি, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে সংঘাতময় সম্পর্ক আছে। আমরা চাই, বড় কোনো সংঘাত না হোক, যেটা হলে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। আমরা চাইব, তারা আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করে ফেলুক। আমরা এরই মধ্যে দেখেছি, দুয়েকটি দেশ কাছ থেকে মধ্যস্থতার প্রস্তাব এসেছে। মধ্যস্থতার মাধ্যমে হোক অথবা দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হোক, আমরা চাই যেনো উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে শান্তি বজায় থাকে। বাংলাদেশ মধ্যস্থতা করতে চায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি না যে, এই মুহূর্তে আমাদের মধ্যস্থতার কোনো ভূমিকা নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। আমরা চাইব, তারা নিজেরা বসে সমস্যা সমাধান করে ফেলুক। তারা যদি আমাদের সহায়তা চায়, তাহলে হয়তো আমরা যাব। কিন্তু তার আগে আমরা আগ বাড়িয়ে কিছু করতে চাই না।
গুজরাটসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তারের খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে পত্রপত্রিকাতেই খবর দেখেছি। এর বাইরে কোনো অফিসিয়াল কমিউনিকেশন আমাদের দেওয়া হয়নি। আর অফিসিয়াল কমিউনিকেশন দিলেও আমাদের দেখতে হবে তারা আসলে বাংলাদেশের লোক কিনা। যদি বাংলাদেশের হয়, আমরা অবশ্যই ফেরত নেব।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মানবিক করিডোর তৈরি করতে চায় জাতিসংঘ। এ বিষয়ে শর্তসাপেক্ষে নীতিগতভাবে সম্মত আছে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সম্মত। এটি একটি মানবিক প্যাসেজ হবে। কিন্তু আমাদের কিছু শর্ত আছে। যদি শর্ত পালন হয়, তবে অবশ্যই আমরা সহায়তা করব। এ সময় মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত আমাদের স্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ মিয়ানমারের একটি বিরাট জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে এবং আমরা তাদের ফেরত পাঠাতে চাই। ফেরত পাঠাতে যা কিছু করার প্রয়োজন, সেটি আমাদের করতে হবে।
বাংলাদেশ সীমান্তে অধিকার পরিবর্তন হয়ে গেছে জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, এখানে একটি নন-স্টেট অ্যাক্টরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পুরো সীমান্ত। সেখানে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনোও নিয়ন্ত্রণ নেই। কাজেই আমাদের নিজেদের স্বার্থে কোনোও না কোনো যোগাযোগ- অর্থাৎ নন-স্টেট অ্যাক্টরের সঙ্গে আমরা আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে পারি না। কিন্তু আমরা চাইলে বিচ্ছিন্নও থাকতে পারব না।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?