ভাত দিতে দেরি হওয়ায় যুবকের আত্মহত্যা!
নেত্রকোনার পূর্বধলায় পৃথক ঘটনায় দুইজন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার বিশমপুর গ্রাম ও বারহা উত্তর পাড়া গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।
স্ত্রীর পরকীয়ার অভিযোগে মোবারকের আত্মহত্যা
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের বিষমপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার বাড়ির বারান্দায় মোবারক হোসেন (৪২) আত্মহত্যা করেন। তিনি পূর্বধলার আগিয়া ইউনিয়নের মহিষবেড় গ্রামের আব্দুস সালাম ও লাইলী বেগমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোবারক হোসেনের স্ত্রী খায়রুন নাহারের সাথে একই গ্রামের বাদশা মিয়ার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি খায়রুন নাহার তার পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। কয়েক দিন আগে মোবারক ঢাকায় গিয়ে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন, তবে ব্যর্থ হন। স্ত্রীর প্রতি অভিমান ও মানসিক যন্ত্রণায় মোবারক বাদশা মিয়ার বাড়ির বারান্দায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
আজ শনিবার সকালে বাদশা মিয়ার স্ত্রী সেলিনা বেগম বারান্দায় ঝুলন্ত অবস্থায় মোবারকের মরদেহ দেখতে পান। পরে তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসে। পরে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
মোবারক হোসেন ও খায়রুন নাহারের ৪ ছেলে রয়েছে। বড় ছেলে কামরুল হাসান জিহাদ বিবাহিত। অপরদিকে বাদশা মিয়া ও সেলিনা বেগমের তিন ছেলে রয়েছে।
এ বিষয়ে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আলম বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ভাত দিতে দেরি হওয়ায় নাঈমের আত্মহত্যা
একইদিনে উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বারহা উত্তর পাড়া গ্রামে নাঈম মিয়া (২৩) নামের এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি ওই গ্রামের আব্দুল মোতালিব ও হাজরা খাতুনের ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাঈম দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। ফলে তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে নাঈম তার মায়ের কাছে ভাত খাওয়ার কথা বলেন। তার মা জানান, ভাত এখনো রান্না হয়নি, রান্না হলে কিছুক্ষণ পরে খেতে পারবে। পরে পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান যে, বসতঘরের পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নাঈম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহ নামিয়ে আনা হয়। মাদকাসক্তি ও মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আলম বলেন, ‘দুই ঘটনাতেই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। একটি মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং অন্যটি পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।