হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সমিতির পরিচালক, অবরুদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

পিরোজপুর প্রতিনিধি
২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:২৬
শেয়ার :
হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সমিতির পরিচালক, অবরুদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালক মো. রহমাত উল্লাহ। প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক গ্রাহকের হাজার কোটি টাকার আমানত নিয়ে তিনি পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গ্রাহকদের তোপের মুখে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সমিতির ম্যানেজার মো. বেল্লাল মিয়াসহ কর্মচারীরা।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা সমিতির পরিচালক রহমাত উল্লাহর গ্রামের বাড়ি উপজেলার আরামকাঠিতে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা সমিতির ম্যানেজার মো. বেল্লাল হোসেন, মো. শাকিল হোসেন, নিখিল তহসিলদারসহ মোট ৪ জনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

ভুক্তভোগী নিলুফা নামে এক নারী অভিযোগ করেন, তিনি সমিতিতে এককালীন চৌদ্দ লক্ষ টাকা জমা রেখেছেন। গত কয়েকমাস যাবত টাকা ফেরত চাচ্ছিলেন। হঠাৎ শনিবার বিকেলে জানতে পারেন, রহমত উল্লাহ পরিবার নিয়ে উধাও হয়েছেন। গত তিন দিন তার পরিবার এলাকা থেকে লাপাত্তা।

চানাচুর ও ঝালমুড়ি বিক্রেতা রওশনারা নামে এক নারী ওই সমিতিতে টাকা জমা রাখতেন। তিনি অভিযোগ করেন, তিনি রাস্তায় চানাচুর ও ঝালমুড়ি বিক্রি করে রহমত উল্লাহর সমিতিতে এককালীন ২ লাখ এবং প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা করে আমানত রাখতেন। সব মিলিয়ে তিনি ৮ লাখ টাকা পাবেন।

রিনা বেগম নামে অপর এক নারীর জানান, তিনি মেয়েকে বিবাহ দেয়ার জন্য সমিতিতে এককালীন ৩ লাখ টাকা রেখেছিলেন।

গ্রাহকের কাছে আটক রহমত মিয়ার সমিতির ম্যানেজার মো. বেল্লাল মিয়া বলেন, শুনেছি তিনি চারদিন আগে পরিবার নিয়ে ঢাকায় গেছেন। সেই থেকে তার সাথে আমাদের আর কোন যোগাযোগ নেই। এখন গ্রাহকরা আমাদের আটকে রেখেছে।

স্থানীয় জলাবাড়ী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বর নকিব উল্লাহ সরদার জানান, পালিয়ে যাওয়া সমিতির পরিচালক ও একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল গফ্ফার মিয়ার ছেলে রহমাত উল্লাহর সমিতিতে আমানত রাখার বিষয়ে দু-একজন গ্রাহক আমার কাছে পরামর্শ চায়। এ ব্যাপারে আমি তাদেরকে বলি ওই সমিতির মালিক যদি মারা যায় বা উধাও হয়ে যায় তখন আপনাদের আমানতের কি হবে। এ ক্ষেত্রে কোন কোন আমানতকারী আমার কথা শুনেছেন আবার কেউ শোনেননি।

নেছারাবাদ উপজেলার সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি বলেন, তার সমিতির লাইসেন্স বরিশাল বিভাগ থেকে করা। তারা আমাদের আইন না মেনে চলতেন। শুনেছি এখন নাকি সমিতির পরিচালক পালিয়েছেন।

নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বনি আমীন জানান, বিষয়টি শুনেছি। আমি পুলিশ পাঠিয়ে খবর নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।