শৈলকুপায় রসুনের দাম দ্বিগুণ, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সরবরাহ কিছুটা কমে যাওয়ায় রসুনের দাম বেড়েছে বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। রসুনের দাম হঠাৎ বেড়ে ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
শৈলকুপার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, রসুনের দোকানগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ সরবরাহ রয়েছে। দুই সপ্তাহ আগেও রসুন কেজি প্রতি প্রকারভেদে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে প্রকারভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি ধরনের রসুন দুই সপ্তাহ আগেও খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি দরে। বর্তমান দাম বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা দরে। বড় আকারের রসুন বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে। দুই সপ্তাহ আগেও রসুনের দাম যা ছিল, আজ রসুনের বাজার ৫০-৬০ টাকা কেজি প্রতি বেশি। দাম বেশি হওয়ার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলেও কৃষকের মাঝে খুশি দেখা যায়। তবে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রসুনের দাম আরও বাড়তে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
পৌর এলাকার বাসিন্দা ইজি বাইক চালক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘২ সপ্তাহের ব্যবধানে এক লাফে কেজিতে রসুনের দাম বাড়ল ৫০-৬০ টাকা । আমরা চাই রসুনের দাম যেন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসে। এমনিতেই সবকিছুর বাড়তি দামের কারণে সংসার চালাতে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার এত দামে রসুন কিনলে বাকি বাজার করব কি দিয়ে। তাই দাম বেশি হওয়ায় ২৫০ গ্রাম রসুন কিনলাম।’
বাজারে কেনাকাটা করতে আসা উপজেলার হরিহরা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিদিন ৩০০ টাকা হাজিরায় কাজ করি। দুদিনের টাকা জমিয়ে বাজারে এসেছি। ৪০০ টাকা নিয়ে বাজার করার জন্য এসে দেখি ভাল মানের রসুনের কেজি ১৪০ টাকা যা ২ সপ্তাহ আগেও ছিল ৮০ টাকা। এখন এক কেজি রসুন কিনলে আর চাল, ডাল ও সবজির টাকা কোথায় পাব। রসুনের দাম না কমলে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে।’
শৈলকুপা বাজারের রসুন বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, ‘হঠাৎ করেই রসুনের সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে। দেশি রসুন দিয়েই বেশ কিছুদিন ধরে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। সরবরাহ ভালো থাকায় রসুনের দামও কম ছিল। তবে এখন বাজারে যেসব রসুন উঠছে এর অধিকাংশই শুকনো রসুন তাই দামও বেশি।’
শৈলকুপা বাজারের আড়তদার রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকরা বর্তমানে রসুন বিক্রি না করে পরবর্তী সময়ে বাড়তি আয়ের আশায় সংরক্ষণ করে রাখছেন এবং মজুদ বাড়াচ্ছেন। সেই সঙ্গে মোকামগুলোয় অনেক ব্যবসায়ী রসুন মজুদ করে রাখছেন বিধায় দাম বেড়েছে যার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষেরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন।’
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান খান বলেন, ‘বাড়তি লাভের আশায় অধিকাংশ কৃষকরা রসুন মজুদ করছেন, যার ফলে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে। এভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। আশা করি বাজারে সরবরাহ বাড়লে রসুনের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’