জামায়াতের দুই কর্মীকে অব্যাহতি

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৬
শেয়ার :
জামায়াতের দুই কর্মীকে অব্যাহতি

ফেনী নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ দলীয় তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের দুই জামায়াত কর্মীকে অব্যাহতি দিয়েছে জামায়াত। 

তারা হলেন ছত্তরুয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন প্রকাশ জাহাঙ্গীর হুজুর ও জয়পুর পূর্ব জোয়ার গ্রামের রবিউল হোসেন। 

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবৈধ বালু উত্তোলন ব্যবসার অভিযোগ দলীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে দল থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংগঠনের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া অভিযুক্ত আরও কয়েকজনের ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলেও সূত্রটি জানায়। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে স্যোশাল মিডিয়ায় তা প্রকাশের পর বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে। 

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে করেরহাট গণিয়াতুল উলুম হোসাইনিয়া আলিম মাদ্রাসার হল রুমে কর্মী সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে অবৈধ ব্যসার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমির আলাউদ্দিন শিকদার। 

তিনি বলেন, ‘যারা সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন রয়্যালিটি নিয়েছেন, তারা সেটার দ্বায়ভার বহন করবেন। প্রয়োজনে ৫ জন কর্মী নিয়ে সংগঠন চলবে। কিন্তু অবৈধ উপার্জনের সাথে যুক্ত কাউকে জামায়াতে স্থান দেওয়া হবে না।’

বৈঠকে জামায়াতের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের বৈধতা যাচাই না করে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হলে তাদের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে যারা বালু ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সিন্ডিকেটে যোগ দিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন, তাদেরকে অর্জিত সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দিয়ে সিন্ডিকেট থেকে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে সংগঠনের এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় নেতাকর্মীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় কর্মীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিচালিত সাংগঠনিক তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছ থেকে জামায়াতের পরিচয় ব্যবহার করে অন্যায্য সুবিধা আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

অভিযুক্ত রবিউল হোসেন বলেন, ‘আমরা বালু ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। আমাদের নিজস্ব ব্যবসা এটি। আমরা কোনো সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে রয়্যালটি নিই নাই। এটা আমাদের ব্যবসায়ের অংশ। এর বেশি কিছু বলতে হলে আপনি সরাসরি এসে কথা বলেন। তারপর আপনাকে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলতে পারব।’

তবে, এ বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর হুজুরকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

১নং করেরহাট ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাষ্টার ফখরুল আলম ভূঁইয়া জানান, এ বিষয়ে আমি কোনো মতামত দিতে পারব না। এটা আমাদের থানা আমীর দায়িত্ব নিয়েছেন। উনি সিদ্ধান্ত নিবেন ও বিস্তারিত বলবেন ।

জোরারগঞ্জ থানা জামায়াতের আমির নুরুল হুদা হামিদী জানান, জামায়াতে ইসলাম কোনো রয়্যালটি গ্রহণ করে নাই। যারা করছেন, তারা ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, আমরা তাদেরকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। তারা আমাদের সংগঠনের দায়িত্বশীল পর্যায়ের কেউ নন। এগুলো আমরা বৈঠকে জনশক্তিদের জানিয়ে দিয়েছি।