রাস্তা নেই, দাঁড়িয়ে আছে ৮ কোটি টাকার সেতু
দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের ছোট ফেনী নদীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু। নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও তৈরি হয়নি দুপাশে সংযোগ সড়ক। এতে জনভোগান্তি চরম পর্যায়ে। সেতুটি এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। স্থানীয়রা চান দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের আশ্রাফপুর-মোমারিজপুরের জনগণের উপকারার্থে আশ্রাফপুরে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছোট ফেনী নদীর ওপর ৬০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাজটি শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছালেহ আহমদ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এর একপাশে কৃষিজমি ও অন্যপাশে ও রাস্তা সংলগ্ন জনবসতি থাকায় ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া নদী থেকে প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার সেতুটির সড়ক সংযোগ করা কষ্টসাধ্য হবে।
স্থানীয় কৃষক রঞ্জিত চন্দ্র দাস জানান, সেতু নির্মাণ হওয়ার খবরে আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও এর দুপাশে রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় আমরা হতাশ। সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় পাশের কাঠের সেতু দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা নদীতে পড়ে যায়। আমরা দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আলী দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, আমাদের এলাকায় ওই সেতু নির্মাণ করে উন্নয়ন করতে গিয়ে আমাদের আরও ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে নদীভাঙনে আমাদের অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এর পরও যদি এটির দুপাশে সংযোগ সড়ক থাকত তাহলেও হতো। কিন্তু রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় এখন আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সেতুটির সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হারিছ আহমদ পেয়ার জানান, আমরা জানি না এর প্রকৌশলী কি হিসেবে এত উঁচু ও রাস্তার সংযোগ না দিয়ে এটি অনুমোদন করলেন? এখন আগামী বর্ষার আগে দ্রুত দুপাশে রাস্তা নির্মাণ না হলে মাতুভূঞা ও বেকেরবাজারগামী লোকজন ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হবেন। তিনি দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করে সেতুটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ জানান, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়নি। জায়গার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা নির্মাণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স. ম. আজহারুল ইসলাম দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, রাস্তা না থাকলে সেতুটি জনগণের উপকারে আসবে না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিস্তারিত জানানো হয়েছে।