চুরির অপবাদে ৩ নারীর চুল কাটলেন সুমন দাস
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে তিন নারীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সড়ক বাজারের হাজী নূর মার্কেটের নিচ তলায় এ ঘটনা ঘটে। বাজারের ব্যবসায়ী সুমন দাসসহ কয়েকজন যুবক চুল কাটার সাথে জড়িত ছিলো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চুল কাটার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কাঁচি দিয়ে এক যুবক নারীর চুল কাটছে। অন্য দুই নারীকে আটকে রাখা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবী জানিয়েছে আখাউড়ার ছাত্র-জনতা এবং আলেম সমাজ। জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নূর মার্কেটের ব্যবসায়ী চাঁদপুর এলুমিনিয়াম স্টোরের মালামাল চুরি করার অভিযোগে তিন নারী ও এক কিশোরীকে আটক করে সুমন দাস। এসময় তার সাথে আরও কয়েকজন যুবক যোগ দেয়। নারীদের কাছে থাকা কয়েকটি কড়াই ও প্লাষ্টিকের হাড়ি উদ্ধার করে সেগুলো চুরির মাল বলে দাবী করে সুমন।
একপর্যায়ে সুমন দাস ও তার সহযোগীরা নারীদের মাথার কাপড় খুলে কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দেয়। নারীদেরকে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে মারধরও করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সুমন দাস কাঁচি দিয়ে নারীর চুল কাটছে। এসময় অন্য দুই নারীকে আটকে রাখা হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীদেরকে উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর থেকে সুমনকে বাজারে দেখা যায়নি। তার দোকানটিও বন্ধ রয়েছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নারীর সম্মানহানির ঘটনায় কঠোর শাস্তি দাবি করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভিডিও সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ ও চিহ্নিত অভিযুক্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকালে স্থানীয় যুবকরা এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। দুপুরে কওমী ফোরামের ব্যানারের প্রতিবাদ মিছিল করতে চাইলে আখাউড়া থানার ওসি ছমিউদ্দিন ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে এ সময় জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন কওমি ফোরাম।
উপজেলা কওমি ফোরামের সভাপতি মুফতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। তিন নারীর চুল কাটার সঙ্গে জড়িত সুমন দাসসহ সবাইকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয় সেজন্য তিনি সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ করেছেন।