কারাগারে নেচে-গেয়ে বর্ষবরণ করলেন বন্দীরা
এবার নাচ-গানসহ নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করেছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীরা। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে আজ সোমবার বন্দীরা মেতে ওঠেন আনন্দ-উচ্ছ্বাসে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তারা নেচে-গেয়ে উল্লাস করেন।
বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে কারাগার কর্তৃপক্ষ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বন্দীরা মঞ্চে ওঠে গান পরিবেশন করেন। অন্যরা হাত তালি দিয়ে আনন্দ করেন।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র সুপার শাহ আলম খান জানান, নববর্ষ উপলক্ষে বন্দীদের জন্য আয়োজন করা হয় নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী বাংলা খাবার। সকালে পরিবেশন করা হয় পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, আলু ভর্তাসহ নানা ধরনের বাঙালি খাবার। দুপুরে দেওয়া হয় পোলাও, মাংস, ডিম মিষ্টিসহ অন্য খাবার। এ ছাড়া কারাগারের ভেতরে মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেখানে বন্দীরা নিজেদের ইচ্ছামতো গান করেন। অনেক বন্দীই নিজের কন্ঠে গান গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
ফ্যাসিবাদ নির্মূলের দৃঢ় প্রত্যয়ে বর্ণিল আয়োজন ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে আজ রাজশাহীতে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করা হচ্ছে। আজ সকাল থেকে প্রাণের উচ্ছ্বাসে বর্ষবরণের অনন্য এই রঙিন উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছেন নবীন-প্রবীণ সাবাই। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ সকাল ৭টায় আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। মহানগরীর সিঅ্যান্ডবির মোড় থেকে বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রাটি শুরু হয়।
এটি বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিশু একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। এখানে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে মিলিত হন সবাই।
বাঙালি ঐতিহ্যের বিভিন্ন অনুষঙ্গ নিয়ে বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রায় রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, পুলিশ সুপার (এসপি) ফারজানা ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
আজ সকাল ৯টায় রাজশাহী কলেজ থেকে বের করা হয় আরও একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এতে অংশ নেন কলেজটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রোভার স্কাউটসহ নানান শ্রেণি পেশার মানুষ। বর্ষবরণ উপলক্ষে সকাল ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে বের করা হয় এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি রাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে আবারও চারুকলায় গিয়ে শেষ হয়। এখানে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানস্থলে মিলিত হন সবাই। এছাড়া বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজশাহীতে বিভিন্ন ছোট-বড় সংগঠন আয়োজন করেছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলাসহ বিভিন্ন ধরনের খেলা এবং নানান বাঙালি আয়োজনের।
রাজশাহী শিশু একাডেমিতে শিশুদের জন্য ছিল চিত্রাঙ্কন, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এসওএস শিশুপল্লীতে আজ সকাল থেকেই পরিবেশন করা হচ্ছে উন্নত মানের খাবার। দিনটি উপলক্ষে রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান আজ সকাল থেকে শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, প্রতিবন্ধী এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য প্রবেশমূল্য ছাড়া দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।