ভারতে সুপারী চুরি করতে গিয়ে বাংলাদেশি নিহত, দু’দিন পর মিলল মরদেহ
গত বৃহস্পতিবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ী এলাকায় সুপারী চুরি করতে গিয়ে খাসিয়াদের গুলিতে নিহত হন এক বাংলাদেশি। দুই দিন পর গতকাল শনিবার রাতে তার মরদেহ ফেরত দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার পেকপাড়া গ্রামের কুটি মিয়ার (৫০) মরদেহ গতকাল শনিবার রাত ১০টার পর মেঘালয় রাজ্যের শিলং জেলার মোশাররম থানার পুলিশ রিংকু বর্ডারহাট দিয়ে বাংলাদেশের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিজিবির উপস্থিতিতে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক মরদেহটি গ্রহণ করেন।
ওসি মো. জাহিদুল হক বলেন,‘স্থানীয়রা জানিয়েছেন কুটি মিয়াসহ ৭ জন ভারতের পাহাড়ী এলাকার ভেতরে সুপারী চুরি করতে গিয়েছিল। ছয় জন পালিয়ে আসলেও কুটি মিয়ার খাসিয়াদের গুলিতে আহত হয়ে মারা যান। গতকাল শনিবার রাতে ভারতীয় পুলিশ কুটি মিয়ার মরদেহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কুটি মিয়ার হাত, পা ও বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। আজ রবিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তার করা হয়েছে।’
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে দোয়ারাবাজার সীমান্তের পেকপাড়া গ্রামের মোকামছড়া পাড়ার কুটি মিয়াসহ ৭ চোরাকারবারী পেকপাড়া বিওপির সীমান্ত পিলার ১২৩০/২-এস বিপরীতে ভারতের ৭ কিলোমিটার ভেতরে নথরাই পুঞ্জির সুপারী বাগানে সুপারী চুরি করতে যায়। এসময় বাগানমালিক ভারতীয় খাসিয়ারা তাদেরকে ধাওয়া দিলে ৬ চোরাকাবারী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। কিন্তু কুটি মিয়া সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে পালিয়ে আসা কয়েকজন বিষয়টি কুটি মিয়ার বাড়িতে জানায়। পরে কুটি মিয়ার স্বজনরা নথরাই এলাকায় গিয়ে তার মৃতদেহ শনাক্ত করে আসেন।
এদিকে ভারত থেকে পালিয়ে আসা একই গ্রামের ৬ চোরাকারবারী হলেন- আইয়ুব আলীর ছেলে হানিফ মিয়া (৩০), মৃত এরাবুল্লাহ’র ছেলে আকবর আলী (৩১), জরিফ উদ্দিন (৪৫), অজুদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৫), ময়না মিয়ার ছেলে ইসহাক মিয়া (৫০) এবং মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে সোনা মিয়া (৫৫)। তারা সবাই আত্মগোপানে রয়েছে। তবে এরমধ্যে খোকন মিয়া ও হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে বিজিবির চোরাচালানীর মামলা রয়েছে।
বিজিবির সুনামগঞ্জ-২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন,‘ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের প্রায় ৭ কিলোমিটার ভেতরে। তারা সবাই গোপনে সীমান্ত অতিক্রম করে সুপারী চুরি করতে গিয়েছিল। ভারতের বিএসএফ জানিয়েছে, ভারতীয় খাসিয়াদের সাথে বাংলাদেশী চোরাকারবারীদের কলহ হয়েছিল। ভারতীয় পুলিশ বিজিবি ও বিএসফের উপস্থিতিতে গতকাল শনিবার রাতে কুটি মিয়ার মরদেহ দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। ফেরত আসা ৬ চোরাকারকারী আত্মগোপানে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’