প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’: ড. খলিলুর রহমান
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরকে ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আজ রবিবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট হলে ‘বাংলাদেশ–চীন সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন: প্রধান উপদেষ্টার ঐতিহাসিক সফর’ এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
খলিলুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এখন একান্তভাবেই বাংলাদেশের। অন্য কোন দেশের উপর আমরা নির্ভরশীল নই। এটি আমাদের কৌশলগত স্বাধীনতার প্রতিফলন। ’
ড. খলিলুর রহমান চিকিৎসা খাতে চীনের নতুন অংশীদারিত্ব নিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের রোগীরা ভবিষ্যতে চীনের কুনমিংয়ে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পাবেন এবং বাংলাদেশে চীনা হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘চীন ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আমরা কখনোই জিরো-সাম গেমের সর্ম্পক হিসেবে দেখি না; বরং উভয়ের সঙ্গে গুরুত্বের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্স ও সোসিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি কৌশলগত পুনর্গঠন পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেখানে চীনের সাথে সম্পর্ক একটি নতুন মাত্রা লাভ করছে।’
সাংহাই ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (এসআইআইএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. লিউ জংই বলেন, ‘চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক কেবল অর্থনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক ও কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষাপটে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে চীন দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বে আগ্রহী।’
এছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়ন কিভাবে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে প্রভাবিত করছে সে বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘এই সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিকে আরও দৃঢ় করেছে। এটি শুধুমাত্র সরকার নয়, জনগণের সম্পর্ককেও প্রতিফলিত করে। এসময় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শ্রমবাজারে সহযোগিতা বৃদ্ধির ঘোষণা দেন চীন রাষ্ট্রদূত।’
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, ‘চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বিষয়গুলো বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হবে বলে আমি আশাবাদী।’
উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম. হকের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ সুফিউর রহমান ও পররাষ্ট্র বিশ্লেষক সৈয়দ শেহনাওয়াজ মহসিন প্রমুখ।