স্বামী, শ্বশুর ও ননদকে আসামি করে হত্যা মামলা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দুই নারীর খন্ডিতসহ ও এক শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার এই ৩ মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানা যায়।
পারবারিক কলহের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। মরদেহ উদ্ধারের সময়েই নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিনকে (২৪) আটক করে পুলিশ। পরে দায়ের করা হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, আসামিকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এদিকে শুক্রবার রাতেই নিহত লামিয়া ও স্বপ্নার বোন মুনমুন বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
আসামিরা হলেন নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিন (২৪), শ্বশুর মো. দুলাল (৫০) এবং তার ননদ মোসা. শিমু (২৭)। মামলার এজাহারেও পারিবারিক কলহের বিষয়টি উল্লেখ করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ইয়াসিনের সাথে ৫ বছর পূর্বে লামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই লামিয়ার শ্বশুর ও ননদ প্রায় সময় তাকে মারধর করতেন। বিয়ের পরে লামিয়া-ইয়াসিন দম্পতির একটি পুত্র সন্তান হয় আব্দুল্লাহ নামের ওই শিশুটির বয়স এখন ৪ বছর। ইয়াসিন মূলত মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী-সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দিতেন না তিনি। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া ও মারামারি হতো বলে এজাহারে উল্লখ করা হয়। এ কারণে লামিয়া তার ছেলে আব্দুল্লাহ (৪) ও বড় বোন স্বপ্নাকে (৩৫) নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকায় মোক্তার হোসেনের বাড়িতে আলাদা ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। নিহত লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার মুজিব ফ্যাশন গার্মেন্টস এ হেলপার হিসাবে চাকরি করতেন।
এদিকে ইয়াসিন প্রায় সময় সেই বাড়িতে গিয়ে লামিয়ার কাছে টাকা দাবি করতেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। দাবিকৃত টাকা না দিলে ইয়াসিন শারীরিক নির্যাতনসহ খুন করারও হুমকি দিতেন স্বামী ইয়াসিন।
এজাহারে আরও উল্লখ করা হয়, গত সোমবার দুপুরে মুনমুন ও তার স্বামী লামিয়াদের ভাড়াটিয়া বাসায় যান। তাদের বাসা থেকে আসার পর থেকে লামিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাদের খোঁজ নেওয়ার জন্য সেই বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি। বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি তাদের। পরে শুক্রবার দুপুরে লামিয়াদের ভাড়া বাড়ির সামনে রাস্তার পাশ থেকে তাদের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় লামিয়া, স্বপ্না ও শিশু আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রথমে লামিয়াকে হত্যা করা হয়। পরে স্বপ্না ও শিশু আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়। লামিয়া ও স্বপনাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে এবং আব্দুল্লাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।