খোলা হচ্ছে পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক

অনলাইন ডেস্ক
১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪০
শেয়ার :
খোলা হচ্ছে পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১১টি রহস্যঘেরা দানসিন্দুক আজ শনিবার সকালে খোলা হচ্ছে।

এর আগে, ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর সিন্দুকগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়, আর গণনা শেষে রেকর্ড ভেঙে এক অভাবনীয় অঙ্ক-৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা সংগ্রহ হয়। সঙ্গে ছিল স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা, এমনকি রুপার অলংকারও।

এবারের বিশেষত্ব হলো, দীর্ঘ সময়-প্রায় ৪ মাস ১৩ দিন পর খোলা হচ্ছে এই সিন্দুকগুলো। সাধারণত প্রতি তিন মাস অন্তর সিন্দুক খোলা হলেও এবার রোজার কারণে সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ের মাঝে ঘটে গেছে একের পর এক ইসলামি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সময়: শবে বরাত, মাহে রমজান, শবে কদর, ঈদুল ফিতর-সবকিছুই ছিল এই সময়ের মধ্যে।

এমন সময়গুলোতে পাগলা মসজিদের প্রতি মুসল্লিদের দানের ঝোঁক থাকে চোখে পড়ার মতো। ফলে এবার অনেকেই আশা করছেন, আগের সব রেকর্ড পেছনে ফেলতে চলেছে এবারের দান।

সকালে দানসিন্দুক খোলার সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য, ব্যাংক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। গণনার কাজে নিয়োজিত থাকার কথা রয়েছে প্রায় ৩০০ জন।

উল্লেখ্য, পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক থেকে প্রাপ্ত অর্থ ব্যয় করা হয় মসজিদের উন্নয়ন, গরিব ও অসহায়দের সাহায্য, মাদ্রাসা ও এতিমখানা পরিচালনাসহ নানাবিধ কল্যাণমূলক কাজে।

পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার হারুয়া এলাকায়, নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রথমে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত হলেও বর্তমানে এটি ৩ একর ৮৮ শতাংশ জমির ওপর বিস্তৃত। তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদটিতে রয়েছে একটি সুউচ্চ মিনার, যা পাঁচতলা ভবনের সমান উচ্চতা বিশিষ্ট এবং দূর থেকেও দৃশ্যমান।

এখানে একসঙ্গে ৬ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এবং নারীদের জন্য রয়েছে পৃথক নামাজের জায়গা।

পাগলা মসজিদের নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা জনশ্রুতি। একটি প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী, ঈসা খাঁর বংশধর দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে ‘জিল কদর পাগলা’ নামক এক আধ্যাত্মিক ব্যক্তি নরসুন্দা নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে তার নাম অনুসারেই মসজিদটির নাম হয় ‘পাগলা মসজিদ’।