লোডশেডিং আগে হবে ঢাকায়, পরে গ্রামে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম ব্যুরো
১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:৩৬
শেয়ার :
লোডশেডিং আগে হবে ঢাকায়, পরে গ্রামে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

গরমের মৌসুমে আগের মতো শুধু গ্রামগঞ্জে লোডশেডিং হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এসব কথা বলেছেন। নগরীর সিআরবিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে এ ব্রিফিং হয়েছে।

গরমে লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘লোডশেডিং হলে সেটা আগে ঢাকায় হবে। দুইটি কারণে বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে। উৎপাদন কম হলে যদি লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন সেটি লোডশেডিং। আর ঝড়-বৃষ্টিসহ কোনো কারণে যদি ফিউজ চলে যায়, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। রমজানের মতো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়তো সম্ভব হবে না। আমরা চেষ্টা করবো। তবে লোডশেডিং যদি হয়, এমন হবে না যে শুধু গ্রামে লোডশেডিং হবে। ঢাকাতে প্রথমে লোডশেডিং হবে। পরে দেশের অন্য জায়গায় হবে। আগের মতো শুধু গ্রামে হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। এ জন্য আমরা এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রিতে রাখতে বলেছি। এটা রাখতে পারলে এক-দুই হাজার চাহিদা কমবে।’

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম মনিটরিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফাওজুল ব্রিফিংয়ে খাল-নালায় ময়লা ফেললে জেল-জরিমানা করার পক্ষে মত দেন।

তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তবে একটা জিনিস দেখে খারাপ লাগছে, কিছুদিন আগে খাল পরিষ্কার করা হলেও সেখানে এখন আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে এই কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারিনি। এ জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হবে। মানুষকে সচেতন করা হবে।ময়লা রাখার বিন দেওয়া হবে। এরপরেও যদি ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হবে।’

ট্রেন পরিচালনার বাইরে অন্য কাজ করতে গিয়ে রেলওয়ের দক্ষতা নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। রেলের কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধি ও রেলকে গতিশীল করতে কাজ করতে হবে৷ 

তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন রাস্তা করতে চাইলে, ওয়াসা পানি দিতে চাইলেও রেল নিতে চায় না। তবে এখন থেকে তা হবে না। সিটি করপোরেশন সিআরবিতে রাস্তা করে দেবে। ওয়াসা পানি সরবরাহ করবে। রেলের কাজ হচ্ছে ট্রেন পরিচালনা করা। প্রতিনিয়ত সেবার মান বাড়ানোর কাজ করতে হবে। রাস্তা করা ও পানি সরবরাহ করা রেলের কাজ নয়। এসব করতে গিয়ে রেলের দক্ষতা নষ্ট হয়। অর্থের অপচয় হয়।’

রেলের এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা খরচ হয়। এভাবে হলে চলবে না। এটি দুই টাকার নিচে নিয়ে আসতে হবে। আর ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচ সংকটে সরকার কাজ করছে। ২৫০টি কোচ কেনার বিষয়ে একটি টিম চীন যাবে৷ 

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা ফাওজুল দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেন করা হবে বলে জানান। তবে এজন্য দুই-তিন বছর সময় লাগবে বলে তিনি জানান।

এসময় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলের মহাপরিচালক, মহাব্যবস্থাপক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সড়ক পরিবহন বিভাগ, চট্টগ্রামের ডিসিসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷