পাচার হওয়া অর্থ ছয় মাসের মধ্যে জব্দ করা হবে: গভর্নর
পাচার হওয়া অর্থ ছয় মাসের মধ্যে জব্দ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। আজ শুক্রবার বিকেলে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম ও সমসাময়িক ব্যাংকিং বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। দেশের সব ব্যাংকের অর্থ পাচার রোধে নিয়োজিত কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
গভর্নর বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার যে উদ্যোগ, তা একেবারেই বাংলাদেশের জন্য নতুন। পদ্ধতিগতভাবে এ ধরনের প্রবলেম আগে ফেস করিনি। ফেস করে থাকলেও এ ধরনের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়নি। এই প্রথম আমরা এটা করছি। সেই জন্য আমাদের অনেক শিখতে হচ্ছে। এটা তো দেশের আইনে হবে না। বিদেশিদের সঙ্গে আমাকে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। তাদের আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম ধাপে চেষ্টা করতে হবে সম্পদগুলো চিহ্নিত করা। সেই ব্যাপারে বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ করছি। আইনি সহায়তার জন্য আমরা চিঠি পাঠাচ্ছি। বিভিন্ন ল ফার্মের সঙ্গে কথা বলছি, তাদের হয়তো খুব শিগগির হায়ার করব। আমরা কিছু ফার্মের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা কার সম্পদ কোথায় আছে, তা বের করবে। সঠিক তথ্য পেতে হবে। সঠিক তথ্য না পেলে মামলা আদালতে টিকবে না। কাজেই আমাকে সেইভাবে তথ্য নিয়ে আসতে হবে। সেই জন্য বিদেশি অ্যাসেট ট্রেসিং ফার্মের মাধ্যমে তাদের ব্যাংক হিসাব, কোম্পানি ও সম্পদ শনাক্ত করতে হবে। আমরা যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি বিদেশিদের কাছ থেকে। তারপরেও জিনিসটা এত সহজ নয়, সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমাদের লক্ষ্য ছয় মাসের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশে সম্পদ শনাক্ত করা। এরপর আদালতে যেতে হয়। কয়েক বছর লেগে যায়।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘চট্টগ্রামেরই বড় গ্রুপ অন্ততপক্ষে সোয়া লাখ কোটি থেকে দেড় লাখ কোটি টাকা নিয়েছে ব্যাংকিং খাত থেকে। আরও কিছু গ্রুপ আছে। ২০, ৪০, ৫০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। আমার ধারণা, বড় গ্রুপগুলোর আড়াই-তিন লাখ কোটি টাকা হতে পারে। ছোটগুলো বাদে। সেগুলোও আদায় করতে হবে অর্থঋণ আদালতসহ অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়ায়।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। সব জিনিসে সব সময় মামলায় দীর্ঘসূত্রতায় যাওয়ার মানে হয় না। কতটা শক্তভাবে ধরতে পারি তাদের, ভালোভাবে ধরতে পারলে আপসটাও ভালোভাবে হয়। সম্পদ শনাক্ত না করলে আমরা ঠকে যাব। আপসে যেতে হলে সঠিক তথ্য বের করতে হবে। তথ্যে গরমিল হওয়া যাবে না। যত ভালো তথ্য পাব, তত ভালো করব আপস বা আদালতে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, বিএফআইইউয়ের পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন, মো. আরিফুজ্জামন, মো. আশিকুর রহমান, স্বরুপ কুমার চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থাপনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।