সহকারী হল সুপার ও হল গার্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বামনী উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র ও এমসিকিউ সিট ছিনিয়ে নিয়ে বৃত্ত ভরাটের অভিযোগ উঠেছে সহকারী হল সুপার ও হল গার্ডের বিরুদ্ধে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের সহকারী হল সুপার শাহ কামাল সবুজ ও হল গার্ড নুরুল করিমের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোসাম্মদ শানজিদা আফরিন। এ সময় তার বাবা নজরুল ইসলামও তার সঙ্গে ছিলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে এসএসসি পরীক্ষার ১ম দিনে বামনী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
মূল অভিযুক্ত সহকারী হল সুপার শাহ কামাল সবুজ বামনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং অপর অভিযুক্ত হল গার্ড নুরুল করিম পেশকারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মোসাম্মদ শানজিদা আফরিন জানান, এসএসসি পরীক্ষার জন্য বামনী উচ্চ বিদ্যালয়ে টেস্ট পরীক্ষায় সে ২য় স্থান অর্জন করে। ফরম ফিলাপের পর স্কুলে কোচিং ক্লাসে অংশগ্রহণ ও প্রাইভেট না পড়ায় চরম ক্ষিপ্ত ও ক্ষুব্দ ছিলেন বামনী উচ্চ বিদ্যালয়ে দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহ কামাল সবুজ। তিনি কোচিং ও প্রাইভেট না পড়ার কারণে হিংস্র হয়ে পরীক্ষার্থী শানজিদা আফরিনকে সহযোগিতা না করে ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষা চলাকালে সহকারী হল সুপার শিক্ষক সবুজের নির্দেশে হল গার্ড নুরুল করিম পরীক্ষার্থী আফরিনকে বিলম্বে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র প্রধান করেন এবং এমআর সিট দিতে গড়িমশির মধ্যে সময় ক্ষেপন এবং সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই তার কাছ থেকে উত্তরপত্র ছিনিয়ে নেন। এর প্রতিবাদ করলে সহকারী হল সুপার শাহ কামাল সবুজ অনৈতিকভাবে পরীক্ষার্থী আফরিনের এমসিকিউতে নিজ ইচ্ছামত বৃত্ত ভরাট করে উত্তরপত্র জমা দেন। সেই সঙ্গে পরীক্ষার্থীকে হল রুমের পাশে নিয়ে গালমন্দ ও চরমভাবে অপমান অপদস্ত করেন। পরিপূর্ণ প্রস্তুতি থাকার পরও ওই দুই শিক্ষকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে শত ভাগ উত্তরপত্র প্রদানে ব্যর্থ হয়ে মাত্র ৬৫শতাংশ উত্তর প্রদান করতে সক্ষম হয় ভুকভোগী শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে সহকারী হল সুপার ও বামনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহ কামাল সবুজ তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তার বিদ্যালয়ের কতজন পরীক্ষার্থী, কতজন কোচিং-প্রাইভেটে অংশগ্রহণ করেছে বা করেনি সে বিষয়ে তিনি কোনোই উত্তর দিতে পারেননি।
হল গার্ড ও পেশকারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল করিম অভিযোগের বিষয় কিয়দাংশ স্বীকার করে বলেন, ‘পরীক্ষার্থীর আফরিন নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অতিরিক্ত সময় চাইলে ওই সময় চেঁচামেচির শব্দ শুনি। এর মধ্যে আমি বাথরুমে থাকায় অন্য কোনো ঘটনার কথা জানি না।’
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, অভিযোগ পেয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবকে ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।